জাফর আহমদ: বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের চার্জ কমাতে চায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান, পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ, মহাব্যবস্থাপক জীএম আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শুভংকর সাহা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের চার্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং পর্ষদ এ চার্জ কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি বলেন, আমাদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও এ কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে এও ঠিক, বিনা কমিশনে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়া সম্ভব না। কারণ এটি ব্যাংকের একটি ব্যবসা। তিনি বলেন, এখন দেশের ১৭টি ব্যাংক মোবাইলে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে বিকাশ ছাড়া বাকি ১৬টি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ। বিকাশ ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
শুভঙ্কর সাহা জানান, সম্প্রতি বিকাশসহ সেবা নিয়ে বেশ কিছু অনিয়মের খবর বেরিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ১০০০ এজেন্টের কার্যক্রম, হিসাব পরিদর্শন করা হয়েছে। মুখপাত্র বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং একটি সীমিত ব্যাংকিং সেবা। তবে এখন ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) বেড়ে গেছে। এর মাধ্যমে অনিয়ম বেড়েছে। বিকাশ কি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিকাশ যেহেতু মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অপরাধের খবর তাদের বেশি। তবে সব কিছু বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেন মুখপাত্র।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সেবার সীমা কমানো হয়েছে। এতে একজন গ্রাহক তার মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ ২ বারে ১৫ হাজার টাকা নগদ জমা এবং ১০ হাজার টাকা নগদ উত্তোলন করতে পারবেন। এভাবে মাসে তিনি ২০ বারে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ জমা এবং ১০ বারে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করতে পারবেন। তিনি জানান, একটি মোবাইল হিসাবধারী কর্তৃক নগদ অর্থ জমা হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করা যাবে না। এই নির্দেশনা শুধু মোবাইল হিসাবে ক্যাশ ইন হলেই প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বেতন, পোশাক শ্রমিকদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, মার্চেন্ট পেমেন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। গত ১১ জানুয়ারি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সংশোধিত প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের সীমা কমানো হলে কোন প্রভাব পড়েনি। গত ডিসেম্বরে ৭৭৩ কোটি টাকা এবং জানুয়ারিতে ৮৪০ কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে লেনদেন হয়। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন