নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলায় বদরুলের যাবজ্জীবন
আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট : বহুল আলোচিত সিলেটের কলেজছাত্রী নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার বদরুল আলমকে যাব্বজীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। ১ মার্চ সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালত থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় গত বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বদরুল। ৮ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২৯ নভেম্বর আদালত বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন খাদিজা। এর মাধ্যমে মামলার ৩৬ সাক্ষীর ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ৮ মার্চ বুধবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ।
প্রসঙ্গত গত বছরের ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্রী নার্গিস। এ সময় স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।
ঘটনার পরদিন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দ-বিধির ৩০৭, ৩২৪ ও ৩২৬ ধারায় শাহপরান থানায় বদরুলকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন। বদরুলের চাপাতির আঘাতে খাদিজার মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কও জখম হয়। হামলার পর প্রথমে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ও পরে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নার্গিসকে। সেখানে অবস্থার উন্নতি হলে ২৮ নভেম্বর তাকে সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয়। সিআরপিতে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরেন নার্গিস। ঘটনার পর বদরুলকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় খাদিজা সিলেট সদর উপজেলার আউশা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে। দ-প্রাপ্ত বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।
সিলেটের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মিসবাহ্ উদ্দিন সিরাজ জানান, আলোচিত এ মামলার রায়ে সুবিচার পেয়েছেন নার্গিস। মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নার্গিস জানান, তিনি এখন ঘুরে দাঁড়াতে চান। মনে শক্তি নিয়ে আবার পড়ালেখা শুরু করবেন।
রায়ের সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস বলেন, এ রায়ে আমরা খুশি। এ রায় বহাল থাকলে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে। রায় ঘোষণার পর বদরুলের আইনজীবী সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। উচ্চ আদালতে আপিল করবো। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান