বিয়ের পর চাকরি করা নির্ভর করে স্বামীর মতামতের উপর
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : চাকরিজীবী নারীদেরও বিয়ের পর চাকরিটা চালিয়ে যাবে, নাকি বন্ধ করে দেবে সেটা অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির লোকজনই নির্ধারণ করে থাকে। আবার মেয়েরা ভালো চাকরি করলেও সন্তান হওয়ার পর তাকে লালন পালনের জন্য সেই নারীকেই বেশিরভাগ সময় চাকরি ছাড়তে হয়।
একটি বেসরকারি সংস্থায় উচ্চ বেতনে কাজ করতেন তাহমিমা আলী। স্বামী উচ্চ শিক্ষিত এবং ব্যবসা করেন। গাড়ী বাড়ি সবই আছে। শুধু বাসা দেখা শোনার লোক কম। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন চাকরি ছাড়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। এ নিয়ে তাহমিমা কয়েকবা রাগ করে বাবার বাড়ি চলে আসেন। এভাবে দুই বছর কেটে যায়। এরপর তাহমিমার সন্তান হয়। সন্তান হওয়ার পরই পরিবার থেকে আবার সেই একই চাপ আসতে থাকে। বাচ্চাকে ঘিরে পুরো পরিবার তাকে জিম্মি করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত তাহমিমা সন্তানের দিকে তাকিয়ে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে অব্যহতি নেয়।
তাহমিমা বলেন, আমি একা নই এরকম অনেক মেয়ের ভবিষ্যত বিয়ের পরে শুধুই সংসারের হাড়ি ঠেলতে ঠেলতে যায়। তিনি জানান, বিয়ের আগে স্বামী বলেছিলো , তোমার যেভাবে চলতে ইচ্ছে করে সেভাবেই চলবে। তুমি শিক্ষিত মানুষ তোমাকে কোন বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করা হবে না। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্বামী বলেন, তুমি যে টাকা বেতন পাও -তার থেকে বেশি আমি তোমার হাত খরচ দেবো। আমাদের তো কম নেই। আমি তাকে বোঝাতেই পারিনি- একজন মানুষ নিজে আয় করলে অন্যের কাছে হাত পাতা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
বিয়ের দুই তিন বছর অনেক যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এরপর সন্তানের কাছে হার মেনেছি। আমার এখন দুটো বাচ্চা। ছোটটার বয়স ২ বছর। আমি এখন তৈরি হচ্ছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চাকরি শুরু করবো। আমার ক্যারিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবুও চেষ্টা করবো। দেখা যাক কি করা যায়।