দেশে ফিরিয়ে আনা হবে : আইজিপি গুলশান হামলার সন্দেহভাজন জঙ্গি ইদ্রিস কলকাতায় গ্রেফতার
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মদদদাতা জেএমবি নেতা মোহাম্মদ ইদ্রিসকে ঢাকায় আনা হবে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় তাকে দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। গতকাল পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এদিকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় সন্দেহভাজন জেএমবি নেতা ইদ্রিসকে কলকাতার এক আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফ। পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, মোহাম্মদ ইদ্রিস নামের ওই জঙ্গি সদস্যকে এ সপ্তাহের শুরুতে কলকাতার বড় বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে ইদ্রিসকে বর্ণনা করা হয়েছে গুলশান হামলার একজন মোস্ট ওয়ান্টেড সন্দেহভাজন হিসেবে। দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ সেল কলকাতা পুলিশকে খবর দেয়, বড় বাজারের এক আস্তানায় লুকিয়ে আছেন ইদ্রিস। তিনি কলকাতা ও হায়দাবাদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছেন এবং রোহিঙ্গাদের অধিকারের পক্ষে সরব হওয়ার কথা বলে তরুণদের জঙ্গিবাদে টানার চেষ্টা করছেন বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল পুলিশের কাছে, লিখেছে টেলিগ্রাফ।
গুলশান হামলার পর বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক জঙ্গি দমন অভিযান শুরু হওয়ায় জেএমবি এখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতিত হওয়ার বিষয়টি ব্যবহার করে কর্মী সংগ্রহ ও নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় আছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দাদের তথ্য। দিল্লি পুলিশের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ লিখেছে, ইদ্রিস গুলশান হামলায় ‘প্রত্যাক্ষভাবে’ জড়িত ছিলেন এবং ওই ঘটনার পরপরই তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে বাংলাদেশ ছাড়তে সক্ষম হন।
ভারতে ঢোকার পর তিনি মাস তিনেক আগে বড়বাজারের কলুটোলায় আস্তানা গাড়েন। তিনি হায়দাবাদে যাওয়া-আসার মধ্যে ছিলেন এবং জেএমবির শীর্ষ নেতা সালেহীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্দেশনা নিচ্ছিলেন।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি ভারতেরই কোথাও লুকিয়ে আছেন এবং দুই দেশেই সংগঠনকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ভারতীয় পুলিশ ইদ্রিসকে গ্রেফতারের বিষয়টি বাংলাদেশে পুলিশের কাউন্টার টোরোরিজম ইউনিটকে জানিয়েছে। বাংলাদেশের পুলিশ চাইলে ইদ্রিসকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগও তাদের দেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় মোহাম্মদ ইদ্রিসের সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেরিয়ে আসে। তিনি ওই হামলার অন্যতম মদদদাতা ছিলেন। হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের হামলায় ২২ জন দেশি-বিদেশি নিহত হন। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর মোহাম্মদ ইদ্রিস দেশের বাইরে পালিয়ে যান। সম্পাদনা: এনামুল হক