কারাগারে নয়, ইউনাইটেড হাসপাতালে ডা. ইকবালের স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছরের দন্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক এমপি ডা. এইচবিএম ইকবালের স্ত্রী ও তাদের তিন ছেলে-মেয়েকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলেও তারা কেউই কারাগারে নেই। বুধবার ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আতাউর রহমান তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অদালতের নির্দেশনা নিয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডা. ইকবালের স্ত্রী মমতাজ বেগম ডলি, মেয়ে নওরিন ইকবাল ও দুই ছেলে মঈন ইকবাল ও ইমরান ইকবাল।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১১ মার্চ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. ফিরোজ আলম অবৈধ সম্পদ দখলে রাখার অভিযোগে দুদক আইনের পৃথক দুটি ধারায় ইকবালের ১০ বছর ও ৩ বছর কারাদন্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার ৫০ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। আর অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অপরাধে তার স্ত্রী ডা. মমতাজ বেগম ডলি, মেয়ে নওরিন ইকবাল ও দুই ছেলে মঈন ইকবাল ও ইমরান ইকবালের তিন বছরের কারাদন্ড দেয় আদালত। এ ছাড়া দন্ডিতদের ১৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ১৬২ টাকার অবৈধ সম্পদও বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয় আদালত। রায় ঘোষণার সময় ইকবাল পলাতক ছিলেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ডা. ইকবাল আপিল করলে হাইকোর্ট ২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। পাশাপাশি ওই সাজা বাতিল প্রশ্নে একটি রুল জারি করেন। পরে হাইকোর্ট ডা. এইচবিএম ইকবালের জামিনও মঞ্জুর করেন। কিন্তু পলাতক আসামি আত্মসমর্পণ না করে জামিন পেতে পারেন নাÑ এমন যুক্তি তুলে ধরে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন জানায়। ওই আবেদন মঞ্জুর করে ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি ডা. ইকবালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ডা. ইকবাল নি¤œ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরের বছর হাইকোর্ট তাকে খালাস দেন। ওই খালাসের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলেও ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি দুদক আর ওই আপিল চালাবে না বলে আদালতকে জানায়।
জানা গেছে, এরা আদালতে কখনই আত্মসমর্পণ করেননি। হাইকোর্টে তাদের সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করার মেয়াদ শেষ হয় ২০১০ সালের নভেম্বরে। ছয় বছর চুপচাপ থেকে নতুন করে স্থগিতাদেশ চাইলে ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর হাইকোর্ট সাজার কার্যকারিতা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। আপিল বিভাগ গত ২৭ নভেম্বর সাজার ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ তুলে নেন। দুদকের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহীম ২০০৭ সালের ২৫ জুন গুলশান থানায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১০ কোটি ৬০ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ২ কোটি ২৯ লাখ ৫২ হাজার ৭১৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়।
কারাগারের একাধিক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, চিৎিসকের পরামর্শ নিয়ে তারা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হাসপাতালে থাকছেন। এতে কারা কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। সম্পাদনা: এনামুল হক