ভিসা কিনতে গত বছর ৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে : টিআইবি
ফেরদৌস রায়হান : ২০১৬ সালে বিদেশে পাড়ি দিতে ভিসা ক্রয় বাবদ ৫ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। এমন দাবি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। এছাড়া পাঁচটি ধাপে ১৬ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেছে সংস্থাটি। শ্রম অভিবাসন খাতের সুশাসন নিশ্চিতে বিদ্যমান আইনের সংস্কার, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৈধ শ্রম অভিবাসনের বিভিন্ন বিষয়সম্বলিত তথ্যের প্রচারসহ নয় দফা সুপারিশ পেশ করেছে টিআইবি।
গতকাল ধানম-ির কার্যালয়ে ‘শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন: সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনজুর-ই-খোদা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা পূর্বক ২০১৬ সালের মে থেকে জানুয়ারী ২০১৭ পর্যন্ত সময়কালে এ গবেষণার তথ্য সংগৃহীত, বিশ্লেষিত এবং প্রতিবেদন প্রণীত হয়।
গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রম অভিবাসন খাতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগের মধ্যে সেবার বিকেন্দ্রীকরণে ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্র ও স্মার্ট কার্ড প্রদান, অনলাইন ভিসা চেকিং-এর ব্যবস্থা অভিবাসনের ব্যয় নির্বাহের জন্য প্্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদান অন্যতম।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন ২০১৩ এর কিছু আইনি ও প্রায়োগিক সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে এই আইনে শ্রম অভিবাসন খাতে সক্রিয় দালালদর কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, আইনের অনেক ধারা নির্দেশনামূলক, বাধ্যতামূলক নয় (যেমন অভিযোগ উত্থাপন, কর্মী বাছাই, ক্ষতিপূরণ আদায়) এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে অভিবাসনকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। অন্যদিকে মোবাইল কোর্টে বিচারের ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদানে এখতিয়ার সংক্রান্ত অস্পষ্টতা, রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্তÍ অভিবাসীর ক্ষতিপূরণের বাধ্যবাধকতা না রাখা, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ ও ডেটাবেইজ থেকে কর্মী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া বাস্তবসম্মত নয় বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। সম্পাদনা: এনামুল হক