লাকসামে জলাবদ্ধতায় ইরি বোরো ফসল উৎপাদনে ঝুঁকি
দেবব্রত পাল বাপ্পী, লাকসাম : কুমিল্লা, লাকসাম, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলাসহ লাকসাম পৌর শহরে গত কয়েকদিনের মাত্রারিক্ত অবিরাম বর্ষণে গ্রামের নির্মাঞ্চলে মারাত্মক জলাবদ্ধতায় আগাম ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছেন কেউ কেউ। ফালগুনের শেষ প্রান্তে এসে সপ্তাহ ব্যবধানে এ দুর্যোগ এ অঞ্চলের সার্বিক জনচলাচল অচল হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির ও তার উপর আকস্মিক জলাবদ্ধতা এবং চলমান ইরি-বোরো উৎপাদনে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ায় মানুষ শংকায় পড়েছে।
৩টি উপজেলাসহ লাকসাম পৌর শহরের নিন্মঞ্চল প্রায় সময়ই মারাত্মক জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে। এ অঞ্চলের একমাত্র ডাকাতিয়া নদীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক খাল জবর দখলসহ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামার কোন জায়গা নেই। ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নাঙ্গলকোটের ৮টি ইউনিয়ন, মনোহরগঞ্জের ১১টি ইউনিয়ন ও লাকসাম উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন, পৌরশহরের ৯টি ওয়ার্ডসহ ৩টি উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের নিন্মাঞ্চল জলাবদ্ধতার শিকারে চলমান ইরি-বোরো মৌসুম এবং আগাম গ্রীষ্মকালিন শাক-সবজির মারাত্মক ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়েছে। পৌরশহরের সড়ক পথগুলো এখনো খানাখন্দে ভরা তবে একাধিক সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। ময়লা-আবর্জনায় শহরের অলি-গলিসহ এলাকার পরিবেশকে বেসামাল করে তুলেছে। নতুন-পুরাতন ডাকাতিয়া নদীসহ সংযোগ খালগুলো এ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। লাকসামের চাইলতাতলী, ঘাগৈর, বেরুলা, কার্জন, মেল্লা, কুচাইতলী ও ছিলনিয়া খালের অবস্থা বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে। ওইসব খালগুলো জবর দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ গতিহীন। তার উপর ময়লা আবর্জনাসহ বিষাক্ত পানি জলাবদ্ধ হয়ে এ অঞ্চলের বিশুদ্ধ পানির মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে নানা রোগের আতংকে সকল পেশার মানুষ।
ইতোমধ্যে খালের উপর ব্রীজ ও কালভাট গুলোর প্রবেশ পথ ভরাট হয়ে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জেলার জলাখ্যাত ৩টি উপজেলায় প্রায় ৫ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। প্রত্যেক বছর এলাকার মানুষ ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফালগুন মাসের শেষ দিকে হঠাৎ প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ৩টি উপজেলাসহ লাকসাম পৌরশহরের কোথাও কোথাও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং বন্যা উত্তর পুন:বাসন প্রকল্প হাতে নিতে হলে কয়ে’শ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে যা ৩টি উপজেলা প্রশাসনের হাতে নেই।