তোমার স্বামী কী করে, রোজগার ভালো তো?
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : একটি বিদেশী এনজিওতে চাকরি করেন সুমিতা। এক দুই মাস পরই বিদেশে যান বিভিন্ন সভা সেমিনারে যোগ দিতে। নারী অধিকার আর নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন ১৫ বছরের বেশি হবে। কিন্তু প্রায় তাকেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।
সুমিতা তার সন্তানদের স্কুলে দিতে আসেন খুব কম। তার স্বামীই বেশির ভাগ সময় তাকে নিয়ে যান। মাঝে মাঝে সময় পেলে তিনি আনেন। আর তখনই অন্য বাচ্চাদের অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাকে। তারা পরামর্শ উপদেশ দিতে থাকেন, মাকে বাচ্চাদের আরও বেশি সয়ম দিতে হয়। না হয়,বাচ্চারা দূরে সরে যায়। অভিভাবকদের কয়েকজন বলেন, আপনি কেন এতো কষ্ট করেন? মেয়ে মানুষ হয়ে দিনরাত খাটাখাটুনি করেন। আর ভাই ( আমার স্বামীর কথা বলেন) ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করেন। উনি কি কিছু করেন না। আবার এইসব অভিভাবকরা আমার স্বামীর দিকেও নাকি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। অনেকের মধ্যে মায়ার চাহনি। তাদের ধারণা আমি আমার স্বামীকে জোর করে বাচ্চা দেখাশোনার কাজ করাচ্ছি। আবার কেউ কেউ তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কেমন পুরুষ বউ দিনের পর দিন বিদেশ গিয়ে থাকে। এমন ভাব করে, যেন আমার স্বামী কিছুই করে না।
সুমিতা বলেন, একদিন এক অভিভাবক আমাকে বলেন, ভাই কি সংসারের খরচ চালান না? আপনি এতো কষ্ট করেন। সুমিতা বলেন, এখনো সমাজটা এমন অবস্থায় । প্রথমেই কেউ যদি কোনো নারীকে প্রশ্ন করে, সেখানে বলে, আপনার স্বামী কি করেন? আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন? এখনো বলেনা, আপনি কি করেন? আর আমি যদি বলি আমি ওমুক কোম্পানীতে চাকরি করি, তাহলে পরের প্রশ্ন আপনার কি সংসারে খরচ দিতে হয়? তারপর হয়তো বলেই ফেলবে, সব সংসারে দেবেন না। নিজের জন্য কিছু রাখবেন। মেয়েদের আয়ে সংসার চলবে, এটা যেনো এখনো বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিতে পারে না।