ট্রুথ কমিশনে অত্যাচার হয়েছে কি না জানা নেই : ব্যারিস্টার মঈনুল
সারোয়ার জাহান : সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে (২০০৭-৮ সালে) বিতর্কিত দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে সংগৃহিত ৬’শ কোটিরও বেশি টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি সম্পর্কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেছেন, সে সময় বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন ছিল এবং পত্রপত্রিকায় দুর্নীতির খবর বিবেচনা করেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে আদালতের যে কোনো সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে রাজি বলেও জানান।
বৃহস্পতিবার এ সম্পর্কে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, প্রথম কথা আমরা দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়ে ছিলাম। কিন্তু তখন দুইটি পথ ছিল। একটি হলো-তখনকার পত্র-পত্রিকায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখা হতো, দেশ দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে এবং তখনকার দুর্নীতির বিভিন্ন মামলার কাগজপত্র এজেন্সিতে ছিল। পত্র-পত্রিকায় এসেছে এবং তার বিচার করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় ছিল, অল্প সময়ে সকলকে জেল খানায় নেয়া বা কোর্টে হাজির না করে যদি যারা দুর্নীতি করেছে তারা নিজেরাই তাদের অপরাধ শিকার করে নেয় তার জন্য আমরা ট্রুথ কমিশন গঠন করে ছিলাম।
তিনি আরো বলেন, যে কোনো বিচারিক কারণে ট্রুথ কমিশন হতে পারে। ট্রুথ কমিশন হলো যদি কেউ স্বেচ্ছায় তার অপরাধ শিকার করে যে, সে অপরাধ করেছে। জেল জুলুম থেকে কেউ যদি এসে শিকার করে যে, সে অপরাধ করেছে। কিন্তু ট্রুথ কমিশনে অত্যাচার হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, একজন আইনজীবী হিসাবে বলছি, আমাদের দেশে আইন কানুন যে বেশি একটা মানা হচ্ছে তা নয়। যেহেতু ১/১১ একটা পরিবর্তন হয়েছে এবং এর ফলে রাজনীতিবিদরা অনেক খেপেছেন। কারণ দুর্নীতি বিরোধী মামলা তাদের বিরুদ্ধে বেশি হয়েছে। পরে যখন তারা রাজনৈতিক সরকার পেয়েছে তখন আমরা যা করেছি সেটাই বে-আইনি মনে হয়েছে তাদের কাছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এখন কি হচ্ছে? পার্লামেন্টে বলা হচ্ছে এখন পুকুর চুরি হচ্ছে না সাগর চুরি হচ্ছে। আমরা যারা উপদেষ্টা ছিলাম তাদের বিরেুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারেনি কোনো সরকার। ট্রুথ কমিশন আমাদের হিসাবে বে-আইনি হয়নি কিন্তু কোর্ট যদি আদেশ দেয় যে ট্রুথ কমিশন বেআইনি তা হলে কোর্টের আদেশ আমাদের মেনে নিতে হবে।
গতকাল আদালতে ব্যবসায়িদের আইনজীবিরা বলেন, দুর্নীতি বিরোধী আইনের নামে তখন ব্যবসায়িদের কাছ থেকে ওই টাকা জোর করে নেওয়া হয়েছিল।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এগুলো ছিল কালো টাকা। ব্যবসায়িরা এই টাকা নিজের ইচ্ছায় দিয়ে ছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তি গ্রহণ করে নি। সম্পাদনা: রাশিদ