কঠিন চাপে বাংলাদেশ, মুশফিক-সাকিবজুটি ভরসা
এল আর বাদল: শেষ বিকালে বাংলাদেশের টপাটপ উইকেট পড়ে যাওয়া এ আর নতুন কী। কোচ আসে কোচ যায়, জাতীয় দলে নতুন নতুন ক্রিকেটারও খেলতে আসে। কিন্তু টেস্ট খেলার জন্যে কঠিন চাপ সহ্য করার মতো শক্তি তারা অর্জন করতে পারে না। সূর্য হেলে পড়লেই মুশফিকবাহিনীর মাথায় যেন ভূত চাপে। রোদের মাঠে তাদের ব্যাটিং উত্তেজনা বেড়ে যায় আর শেষ বিকালের শীতলতায় উত্তেজনা কমে যায়। এটাই টেস্ট ক্রিকেটে টাইগার ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকতায় পরিণত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে গতকাল শততম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে পুরনো রেকর্ডই বাজিয়ে গেল লাল-সবুজের সেনারা।
শুরুটা দেখে মনে হয়নি যে, বাংলাদেশ দিন শেষে ব্যাকফুটে থাকবে। যে দল বিনা উইকেটে ৯৫, এক উইকেটে ১৩০ এবং ২ উইকেটে ১৯২ রান করতে পারে, তাদের কপালে এভাবে আঁচড় কাটবে লঙ্কানরা, তা অনুমেয় ছিল না কারও কাছেই। কিন্তু ব্যাটসমানরা যে আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে মিছিল করতে পারে, সে শঙ্কাটা সবার ভেতরই ছিল। দিন শেষে সেই আশঙ্কাই বাস্তবরূপ দিল ব্যাটসম্যানরা। ২ উইকেটে ১৯২ রানের ইনিংসটা নিমিষেই হয়ে গেল ৫ উইকেটে ১৯৮। মানে ৬ রান তুলতেই তিন উইকেট হাওয়া হয়ে গেল বাংলাদেশের।
টপাটপ উইকেট হারিয়ে যখন দারুণ চাপে বাংলাদেশ, তখন ক্রিজে নেমে নেমে ঠিক টি-২০ স্টাইলে ব্যাট চালাতে শুরু করেন সাকিব আল হাসান। প্রায় প্রতিটা বলেই চড়াও হন তিনি। উইকেটে টিকে থেকে দিনের অবশিষ্ট ক’টা ওভার খেলে দিন পার করে দেওয়ার পরিবর্তে আক্রমণাত্মক মেজাজে আবির্ভূত হন বাংলাদেশের এই তারকা। ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন সাকিব। তিনি যখন মারমুখী ভূমিকায়, তখন উইকেট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সাকিবের টেস্ট মেজাজ বিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিলো সম্মতি ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের।
মুশফিক নিজে অবশ্য মাথাটা পুরোপুরি ঠা-াই রেখেছিলেন। সাকিবের মারমুখী ব্যাটিংকে বাহবা দিলেও তিনি নিজে খেলেন দেখেশুনে। ৭ বলে মুশফিক রয়েছেন ২ রানে অপরাজিত। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে রান ৫ উইকেটে ২১৪। সৌম্য সরকার ৬১, তামিম ৪৯, সাব্বির রহমান ৪২, ইমরুল কায়েস ৩৪ রান করেন। তাইজুল ইসলাম নেমেই প্রথম বলে বিদায়। প্রথম ইনিংসে ৩৩৮ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। এখনো ১২৪ রানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। তবে বাংলাদেশের হাতে রয়েছে পাঁচ উইকেট। আজ নতুন দিনে, নতুন মেজাজে কতটা পথ পাড়ি দিতে পারবে সাকিব-মুশফিক জুটি, সেটাই দেখার। এই জুটি যদি লাঞ্চ বিরতির আগে ভেঙে যায়, তা হলে টেস্ট ড্রর যে স্বপ্ন, সেটাও ম্লান হয়ে যাবে। সম্পাদনা: রাশিদ