রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বলেছে কফি আনান কমিশন
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নিতে বলেছেন, কফি আনান কমিশন। রাখাইন প্রদেশে সংকট দূর করার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে ওই কমিশনের সুপারিশে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের অন্তবর্তী রিপোর্টের সুপারিশে বলা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে মিয়ানমারকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত অন্তবর্তী রিপোর্টটিতে উল্লেখ করা হয়, আন্ত:দেশীয় সন্ত্রাস প্রতিরোধের জন্য দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, অবাধ চলাচল এবং মিয়ানমারের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব বিষয়েও সুপারিশ করেছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে গঠিত এ কমিশন। চলতি বছরের আগস্টে পূর্ণ রিপোর্ট দেবে তারা।
সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রাজনৈতিক অঙ্গনের উচ্চপদস্থ নেতা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিশন গঠন করা উচিত। তাদের কাজ হবে সুষ্ঠু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে সহায়তা করা।
কফি আনান কমিশনের সুপারিশে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার পর তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। সেখানকার রাজনৈতিক পন্থায় মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বেও চরম ঘাটতি আছে বলে মনে করে এই কমিশন। এ কারণে অনতিবিলম্বের মিয়ানমার সরকারের উচিত সবার সঙ্গে আলোচনা করে এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা যার মাধ্যমে দেশটির মুসলিমরা নিজেদের কথা বলতে পারে।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে কফি আনান কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব না থাকার কারণে তারা বৈষম্য ও অবিচারের শিকার হওয়া ছাড়াও তাদের সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মিয়ানমার সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে নাগরিকত্ব সত্যায়ন প্রক্রিয়ার একটি কৌশল এবং সময়সীমা বেঁধে দেওয়া। তবে এ প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ ও দক্ষ। কৌশলটি রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সবার মাঝে তা প্রচার করতে হবে।
গত বছরের ৯ অক্টোবরের পর রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর হামলায় শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়। এছাড়া হাজার হাজার রোহিঙ্গা গৃহহারা হয়েছে এবং ৭০ হাজারেরও বেশি নির্যাতিত রোহিঙ্গা পালিয়ে চলে এসেছে বাংলাদেশে। সম্পাদনা: জাফর আহমদ