ইয়াহুর তথ্য হ্যাকে রাশিয়ার দুই গুপ্তচর দায়ী : যুক্তরাষ্ট্র
বাঁধন: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইয়াহুতে বড় ধরনের হ্যাকিং-এর ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, এ ঘটনার সঙ্গে রাশিয়ার দুই গুপ্তচর জড়িত ছিলেন। এছাড়া সুচারুরূপে হ্যাকিং সম্পন্ন করতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দুই হ্যাকারকে ভাড়া করা হয়েছিল। বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যারি ম্যাককর্ড। হ্যাকিং-এ জড়িত দুই রুশ গুপ্তচর হচ্ছেন দিমিত্রি ডোকুচায়েভ (৩৩) এবং ইগোর সাশসিন (৪৩)। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এ দুজনের মধ্যে দিমিত্রি ডোকুচায়েভ সিআইএর কাছে তথ্য পাচারের অভিযোগে নিজ দেশেই গ্রেফতার রয়েছেন।
ইউএস বিচার বিভাগ বলছে, রাশিয়ার ওই দুই গুপ্তচর দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)-এর সদস্য। সোভিয়েত যুগের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র উত্তরসূরি হিসেবে কাজ করে এই এফএসবি। বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন’ও একসময় কেজিবি’র দাপুটে গোয়েন্দা ছিলেন।
বহুল আলোচিত ওই হ্যাকের ঘটনায় ইয়াহু ব্যবহারকারীদের এক বিলিয়ন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে ৫০ কোটি ইয়াহু মেইল ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার কথা স্বীকার করে ইয়াহু কর্তৃপক্ষ। কোনো ই-মেইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে এত বড় ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনা এটাই প্রথম। ওই সময়ে ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা হিসেবেই দ্রুত পাসওয়ার্ড বদলানোর পরামর্শ দেয় ইয়াহু কর্তৃপক্ষ।
ইয়াহুর প্রধান প্রধান তথ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা বব লর্ড। সেপ্টেম্বরে এক ব্লগ পোস্টে তিনি বলেন, হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর নাম, ই-মেইল ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্মদিনের মতো তথ্যের পাশাপাশি পাসওয়ার্ডের মতো স্পর্শকাতর তথ্যও হাতিয়ে নিয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত নিরাপত্তা হিসেবে প্রশ্নগুলোর উত্তরও সাইবার দুর্বৃত্তদের হাতে চলে গেছে। তবে আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত তথ্য তাদের হাতে গেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে ইয়াহু’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ওই হ্যাকিং-এর ঘটনা ঘটে। তবে এতে জড়িত দেশের নাম প্রকাশ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
আলোচিত এই হ্যাকিং তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশ নেয় আরও কয়েকটি দেশের বিভিন্ন সংস্থা। এরমধ্যে যুক্তরাজ্যের এমআই-৫, দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং টরন্টো পুলিশের মতো বড় বড় সংস্থাগুলো রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যারি ম্যাককর্ড বলেন, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। আর তা হচ্ছে, আমাদের নাগরিকদের গোপনীয়তা এবং আমাদের কোম্পানিগুলোর অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে কারও সঙ্গে আপস করা হবে না। এর সঙ্গে ব্যক্তি, দল কিংবা কোনো রাষ্ট্র; যারাই জড়িত থাকুক না কেন; সবার জন্যই এটা প্রযোজ্য।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট