দক্ষিণ চীন সাগর : চীনের মনোযোগ নৌবাহিনীর দিকে
সৈয়দ রশিদ আলম
ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চীনের বিরুদ্ধে একাধিক বিরুপ মন্তব্য করেছেন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট এর সঙ্গে টেলিফোন সংলাপ করেছেন, চীনের সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যেসব দেশ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে চায় তাদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। যার ফলে চীন দক্ষিণ চীন সাগরে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তাইওয়ানের জলসীমার কাছে চীন বিমানবাহী রণতরী, সাবমেরিন ও মিসাইল সজ্জিত ফ্রিগেট পাঠিয়েছে। ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার নৌবাহিনীকে মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীকে মোকাবিলা করতে সক্ষম চীন দুটি বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে সেইসঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরে একটি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করেছে। সেখানে একাধিক জঙ্গিবিমান ও বিভিন্ন শ্রেণির যুদ্ধ জাহাজ, মিসাইল মোতায়েন করেছে। যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্প উগ্র মেজাজের মানুষ, বিষয়টা চীনকে ভাবিয়ে তুলেছে। চীন জানে, চীনবিরোধী দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়ে যাবে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে চীন সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে নৌবাহিনীর উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছে।
২০১৬ সালের চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১৩ হাজার ৯ শত কোটি ডলার। ২০১৭ সালে এই বাজেট ৭ শতাংশ বেড়ে যাবে। এর একটি অংশ নৌবাহিনীর সমরাস্ত্রের পেছনে চীন ব্যয় করবে। সেইসঙ্গে নিজের পরমাণু অস্ত্রকে উন্নয়ন ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার জন্য মনোযোগ দিবে। দূরপাল্লার মিসাইলের উন্নয়ন ঘটাবে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যদি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়া কখনো নৌযুদ্ধে জড়িয়ে পরে তাহলে চীন তার দখলে থাকা দক্ষিণ চীন সাগরে তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চাইবে। যদি একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী না থাকে তাহলে একা চীনের পক্ষে একাধিক শত্রু দেশকে মোকাবিলা করা সম্ভব না। তাই দক্ষিণ চীন সাগরে, যেখানে রয়েছে শতশত কোটি ডলারের প্রাকৃতিক সম্পদ এই সম্পদকে নিজের দখলে রাখার জন্য চীন যা যা করার তাই করতে চাইবে অপরদিকে দীর্ঘদিন থেকে দক্ষিণ চীন সাগরের প্রাকৃতিক সম্পদের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কুদৃষ্টি রয়েছে। এখন দেখার বিষয় ভবিষ্যতে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারে কিনা? কারণ, একাধিক দেশকে মোকাবিলা করা চীনের পক্ষে সম্ভব, কি সম্ভব না তা ভবিষ্যতই বলে দিবে।
লেখক: কলামিস্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান