নাগশ্বরীতে দেড় হাজার পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
এম এস সাগর, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলাধীন নবাগত কচাকাটা থানার বল্লভেরখাস ইউনিয়নের বলরামপুর ফান্দের-চরের মানুষের দুর্বিষহ জীবন দৈনন্দিন কাটে অভাব বঞ্চনায়।
দুধকুমর নদীর কড়াল গ্রাসে পরপর দু’বার বিলীন হওয়া প্রায় ১হাজার ৫০০পরিবার মানবেতার জীবন করছে। বন্যা অনাবৃষ্টি এবং দুর্ভিক্ষের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকারগ্রস্ত ফান্দের-চরের মানুষ। চরাঞ্চলের নেতিয়েপড়া অসহায়দের ৬০০শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দুধকুমর নদী পরিবেষ্টিত বন্যা বর্ষাকালীন সময়ে এই চরাঞ্চলের মানুষের জীবন চিত্র কষ্টক্লিষ্ট বেদনাবিধুর। অবহেলিত এখানকার মানুষের যাতায়াতের নেই কোনো সুযোগসুবিধা। বলরামপুর ফান্দের চরের নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারা পরিবারের নিত্য সঙ্গী দুঃখ বঞ্চনা অবহেলা। তাদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন কুমিল্লা, ফেনী, টাঙ্গাইল, বগুড়া, ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ ইত্যাদি জেলা কাজ করাসহ নদীতে মাছ ধরে ও বিক্রি করে অসহায় জীবন যাপন করছে।
এখানকার কিছু মানুষ বালুচরকে আবাদী হিসেবে পরিণত করেছে। ধান পাট ও চিনা ফসল নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আবাদ করার পর বন্যার করাল গ্রাসে প্রতি বছরই তা বিলীন হয়ে যায়। বন্যার সময় বাড়ি-ঘরে থাকে হাটুসম পানি। তখন মাচা কিংবা ভেলায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে। ফান্দের-চরের জনগণকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সব সময় বন্যার মোকাবেলা করতে হয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি থেকে তারা বঞ্চিত। চরের ওপারে একটি মাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে পড়তে হলে নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে ধুধু বালুচর হেটে যেতে হয় প্রায় ৯ কি. মি. দূরে নাগেশ্বরী শহরে আসতে হয়। আর্থিক দৈন্যতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসা সেবাকে অবলম্বন করে বেঁচে থাকতে হয়। ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় অনেকে।
নদী ভাঙনের শিকারগ্রস্ত কর্মহীন মানুষ আবুল কাশেম, আজাহার আলী মুন্সি, মঞ্জুয়ারা বেগম ও জাহেদা বেগম বলেন, আমরা অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছি। আমরা সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান