কোনটা টেরোরিস্ট অ্যাক্ট আর কোনটা মুক্তিসংগ্রাম চিনব কীভাবে?
পিনাকী ভট্টাচার্য
আমেরিকা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ চালাচ্ছে, আমরা সবাই জানি। বাংলাদেশের সরকারও সন্ত্রাস, টেরোরিজম এসব কথা বলে। ইন্টারেস্টিং কথা হচ্ছে, টেরোরিজমটা কী সেইটা তারা স্পষ্ট করে ডিফাইন করেনি। এইটা যে করা মুশকিল তা আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট নিজেও স্বীকার করে। মুশকিল এই জন্যই, কোনটা টেরোরিস্ট অ্যাক্ট আর কোনটা মুক্তি সংগ্রাম এইটা চিনব কীভাবে? কাশ্মীরের মুক্তি সংগ্রামীকে যদি টেরোরিস্ট বলি তাহলে তো আমাদের ক্ষুদিরামকেও টেরোরিস্ট বলতে হয়।
তাহলে এই মুশকিলের আসান কীভাবে করেছে আমেরিকা? সে বলেছে, আমরা একটা তালিকা বানাব স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে, ওই তালিকায় যার নাম থাকবে সেই টেরোরিস্ট। এখন স্টেট ডিপার্টমেন্টকে জিজ্ঞেস করবেন না আবার, যে এই তালিকায় নাম ঢুকালেন কীসের ভিত্তিতে? স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে যে উত্তর আছে তাতে পৃথিবীর তাবৎ মুক্তি সংগ্রামীকে টেরোরিস্ট তকমা দেওয়া যাবে। নেপালের মাওবাদীরাও আমেরিকার টেরোরিস্ট তালিকায় ছিল। এখনো ফিলিপাইনের কমিউনিস্ট পার্টি তাদের টেরোরিস্ট তালিকায় আছে।
তাহলে আদতে দাঁড়াচ্ছে কী? কাউকে সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেওয়ার আগে, দেখে নিতে হবে আমাদের মুক্তি সংগ্রামীরা কি এই সংজ্ঞায় টেরোরিস্ট হিসেবে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে? যদি হয়, তাহলে সংজ্ঞায় বড় ধরনের গলদ আছে। এই সংজ্ঞা দিয়ে টেরোরিস্ট খুঁজতে গেলে বিপদ।
লেখক: চিকিৎসক ও কলামিস্ট
ফেসবুক থেকে