প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর এজেন্ডায় নেই তিস্তার বিষয় খসড়া চূড়ান্তের আশ্বাস মোদির
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি চূড়ান্ত হচ্ছে না। তবে এই সফরে চুক্তির খসড়ায় ঐকমত্যের ঘোষণা আসতে পারে দুই দেশের দুই রাষ্ট্রপ্রধানের যৌথ বিবৃতিতে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তার বিষয়ে আশানুরূপ ঘোষণার কথা বলা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তিস্তা চূড়ান্তরূপ না পেলেও ফলপ্রসূ আলোচনা হবে এ বিষয়ে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কূটনৈতিক সূত্র এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে প্রতিদিনই। সেই সব প্রতিবেদনে তিস্তার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আলোচনার এজেন্ডাভুক্ত হয়নি তিস্তা বিষয়। গত এক বছর ধরেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তার পানি বন্টন বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তির কথা বলা হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকেও আপত্তি নেই। ২০১৫ সালের জুনে মোদি বাংলাদেশ সফরে বলেছিলেন, শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তার পানিসহ অন্যান্য অমীমাংসিত বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে তিস্তার বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আরও সময় চাওয়া হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এই সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীই ভালো জানেন। কারণ আলোচ্যসূচিতে এটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর পিছিয়ে দেওয়ায় দেশটির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, দুই দেশের পর্যবেক্ষণসহ নথিপত্র নিয়ে আলোচনা হবে। খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম বলেছেন, তিস্তার বিষয়ে আন্তরিক ভারত সরকার। এজেন্ডায় না থাকলেও এ বিষয়ে আলোচনা অবশ্যই হবে। তিনি বলেন, ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করলেই একটা কার্যকর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, চুক্তির আগে কখনোই বলা যাবে না, চুক্তি এবারই হচ্ছে বা হবেই। এই সফরে তিস্তা আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। এজেন্ডায় থাকুক বা না থাকুক। তিনি বলেন, ৮ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কথা হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এই সরকারই তিস্তার বিষয় চূড়ান্ত করবে। এবারের সফরেই চুক্তি চূড়ান্ত হবে কি হবে না তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। তবে তিস্তার বিষয়ে আমাদের জনগণ ও সরকারের প্রত্যাশা সম্পর্কে ভারতের জানা।
এদিকে ভারতের কয়েকটি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বলছে, শেখ হাসিনার সফরের এজেন্ডায় না থাকলেও দুই দেশের শীর্ষপর্যায়ের আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে তিস্তা প্রসঙ্গ। ঢাকা-নয়াদিল্লির সম্পর্কেও ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এমনটাও বলছে ভারতের গণমাধ্যম। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সফরের সময় দুদেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি সই না হলেও এর খসড়া তৈরি হতে পারে। আর মূল চুক্তিটি হতে পারে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে।
আউটলুক ইন্ডিয়া, প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া, হিন্দু টাইমসসহ আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, এতে বলা হয়েছে, দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি চায় ঢাকা। সম্পাদনা: এনামুল হক