যেভাবে পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সুখী দেশ
বিশ্বজিৎ দত্ত: দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সুখী দেশ পাকিস্তান। বৈশ্বিক বিচারে যার অবস্থান ৮০তম। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের অবস্থান ১১০ ও ১২২তম। পাকিস্তানের সুখী হওয়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তানের র্যাংকিং ভালো হওয়ার কারণ তাদের রাজনৈতিক স্ট্যাবেলিটি রয়েছে। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা সরকারের উপর আস্থা রাখছে। গত কয়েক টার্মে তাদের গণতান্ত্রিকভাবে সরকার নির্বাচিত ও পরিবর্তন হয়েছে। এর বাইরে পাকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের হার ভালো। মাথাপিছু গড় আয়ও ভালো। বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট ও চীনের ভালো বিনিয়োগ রয়েছে পাকিস্তানে। সেখানে কর্মসংস্থান বেড়েছে। পাকিস্তানের সীমান্ত কয়েকটি সংলগ্ন কিছু এলাকা বাদে তাদের ৪টি প্রদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। বিশেষ করে পাঞ্জাব, সিন্ধুর অর্থনীতি খুবই ভালো পর্যায়ে রয়েছে। পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থা, ইলেকশন কমিশন খুবই শক্তিশালী। মতপ্রকাশের বিষয়টিও দক্ষিণ এশিয়ার বিচারে পাকিস্তানে ভালো। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মান্ধতা রয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ে প্রকাশ্য মত ও পথও আছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের সুখী তালিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলামের মতে এই তালিকা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ পাকিস্তানে আইনশৃঙ্খলা খুবই খারাপ। সেখানে মানুষ সুখী হয় কীভাবে। তাদের বৈদেশিক বিনিয়োগ ভালো। কিন্তু জিডিপির প্রবৃদ্ধি তো বাংলাদেশের নিচে। পাকিস্তানের এখন জিডিপির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে আছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ নরওয়ে। প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্ককে পেছনে ফেলে এবার তালিকার এক নম্বরে উঠে এসেছে দেশটি। আর ১৫৫টি দেশের মধ্যে সুখী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ১১০তম। বাংলাদেশের উন্নতি নেই, অবনতিও নেই। গত সোমবার জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) থেকে ‘বিশ্ব সুখ দিবস’ উপলক্ষে ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০১৭’ প্রকাশিত হয়। ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।
বিশ্বের সুখী দেশের এই তালিকা তৈরি করতে ছয়টি মানদ-কে বিবেচনায় নেওয়া হয়। এই ছয় মানদ- হলো মোট দেশজ উৎপাদন, স্বাস্থ্যকর গড় আয়ু, নিজের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, উদারতা, সামাজিক সমর্থন এবং দুর্নীতিবিহীন সরকার ও ব্যবসা।
প্রতিবেদন তৈরির সময় দেড়শরও বেশি দেশের এক হাজারের বেশি মানুষকে একটি সহজ প্রশ্ন করা হয়। জরিপের অন্তর্ভুক্ত মানুষকে ১০টি ধাপওয়ালা একটি মই কল্পনা করতে বলা হয়। মইয়ের ১০ নম্বর ধাপে যিনি দাঁড়িয়েছেন, তিনি সবচেয়ে সুখী। ১০ নম্বর ধাপের জন্য একটি পয়েন্ট ঠিক করা ছিল। উল্টো দিকে যে যত নিচের ধাপ বেছে নিয়েছেন, তিনি তত অসুখী, তার স্কোরও তত কম। সম্পাদনা: এনামুল হক