বর্ডার হাটের জন্য সই হবে ৫ বছর মেয়াদি চুক্তি আপদকালীন সময়ে ভারত থেকে সরাসরি নিত্যপণ্য আমদানি করবে টিসিবি
হাসান আরিফ: আপদকালীন সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটাতে টিসিবি ভারতের ট্রেডিং করপোরেশনের মাধ্যমে সরাসরি পণ্য আমদানি করবে। একই সঙ্গে দুদেশের কৃষিপণ্যের বাণিজ্য উন্নয়নে কাজ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠান দুটি। এছাড়া দুদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার বর্ডার হাট চালু থাকলেও এর মেয়াদ না থাকায় এ বিষয়েও নতুন চুক্তি করা হবে। আর বর্ডার হাট পরিচালনার জন্য সই হবে মুড অব অপারেশন (এমওও)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলক্ষে পণ্য আমদানির জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও স্টেট ট্রেডিং করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এসটিসি) এবং মধ্যে বর্ডার হাটের জন্য উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। বর্ডার হাটের এমওইউ প্রধান মন্ত্রীর ভারত সফরে সই হলেও এর কার্যকারিতা দেখানো হবে ২০১৩ সাল থেকে। তবে চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর থেকে অটো রিনিউয়্যাল হবে প্রতি ৫ বছর পরপর।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষি পণ্যের বাণিজ্য বাড়াতে ও প্রয়োজনের সময় পণ্য বিনিময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারি পর্যায়ে পণ্য আমদানি করা হবে। একই সঙ্গে দুদেশের বাজার ও পণ্য পরিস্থিতির তথ্য বিনিময় সহজ করা হবে। এজন্য উভয় দেশের বাণিজ্য মিশনকে সহযোগিতা করা হবে। সমঝোতা স্মারক হওয়ার পর যখন যে পণ্য আনার প্রয়োজন হবে, তখন বাংলাদেশের টিসিবি ভারতের এসটিসির মাধ্যমে সরাসরি আমদানি করতে পারবে। এজন্য আলাদা দরপত্রের প্রয়োজন হবে না। তবে প্রতিষ্ঠানের বাজার যাচাই করার ক্ষমতা থাকবে। এতে উভয় পক্ষ প্রয়োজনীয় শর্ত ও গ্যারান্টি দেবে। কোনো সমস্যা হলে তা আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করতে লিখিত মতামত দেওয়া হবে। প্রতি ৫ বছরের জন্য চুক্তি করা হবে। এর পর তা নবায়ন না করা হলে আগের চুক্তি অনুযায়ী চলতে থাকবে। চুক্তি বাতিল হলেও এর আওতায় যেসব কাজ হবে তা কার্যকর থাকবে।
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সালেহ মো. গোলাম আম্বিয়া বলেন, ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা সই হলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটাতে জরুরি প্রয়োজনে প্রতিবেশী দেশটির সহায়তা মিলবে। তিনি বলেন, এখন কোনো পণ্য আমদানি করতে হলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে বাজার নিয়ন্ত্রণ দুরূহ হয়ে পড়ে। প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত পণ্য আমদানি করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে টিসিবি সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেল খোলা বাজারে বিক্রি করছে। বাজারে দাম অস্থিতিশীল হলে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও খোলা বাজারে বিক্রি করে এ সংস্থা। এ ছাড়া রমজানে ছোলা ও খেজুর বিক্রি করে।
এদিকে সমঝোতা স্মারক নবায়ন না করেই চলছে বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার হাট। সীমান্তবর্তী এলাকার দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী উভয় দেশে বিক্রয় ও বিপণনের জন্য চালু করা হয় বর্ডার হাট।
২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ৩ বছরের জন্য সম্পন্ন হয়। এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. রুহুল আমীন সরকার ও ভারতের সরকারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অরবিন্দ মেহতা। ২০১৩ সালে এমওইউর মেয়াদ শেষ হলেও উভয় দেশ হাট চালু রেখেছে। তাই এই প্রক্রিয়াটি বৈধতা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সফরে যে এমওইউ হতে তা ২০১৩ সাল থেকেই কার্যকর দেখানো হবে। আর এই চুক্তি প্রতি ৫ বছর পরপর অটো রিনিউয়্যাল হবে। তবে কোনো দেশ এই চুক্তি বাতিল করতে চাইলে ৬ মাসের নোটিসে তা বাতিল করতে পারবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ডার হাটের জন্য উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। এর বাইরে সই হবে মুড অব অপারেশন (এমওও)। এই চুক্তির আওতায়ই মূলত বর্ডার হাট পরিচালনা হবে।