দেশীয় উপাদানে শক্তিশালী বোমা র্যাব-পুলিশের বিশেষ অভিযান
বিপ্লব বিশ্বাস: নব্য জেএমবির বিস্ফোরক ও বোমা বিশেষজ্ঞরা হাতে তৈরি গ্রেনেড বানানোর ক্ষেত্রে আগের চেয়েও পারদর্শী বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ‘আগে জঙ্গিরা ভারতীয় বিস্ফোরক ক্যাপের বম্ব ডেটোনেটর ব্যবহার করতো, কিন্তু এখন ব্যবহার করছে স্থানীয় উপাদানে নিজেদের হাতে তৈরি ডেটোনেটর।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জঙ্গি সংগঠনটির বোমা বিশেষজ্ঞরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারা স্থানীয় উপাদান ব্যবহার করেই বিস্ফোরক তৈরি করতে পারছে। এটা খুবই আশঙ্কাজনক। সম্প্রতি কুমিল্লা, মিরসরাই ও সীতাকুন্ডে উদ্ধার বোমাগুলোর মধ্যে মিল রয়েছে। ওইসব বোমা বানানোর প্রক্রিয়াও একই ধরনের। তারা আরো জানান, বিস্ফোরক তৈরির নতুন প্রবণতা আশঙ্কাজনক। এই প্রবণতা চট্টগ্রামের লালখান বাজার, সদারঘাট ও খাজানগরের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে জঙ্গি আস্তানা ‘সাধন কুটিরে’ অভিযানের পর প্রচুর ইলেকট্রনিক চিপ পাওয়া গেছে। এই আস্তানাকে বিস্ফোরক প্রস্তুত করার কারখানা হিসেবে ব্যবহার করতো জঙ্গিরা। অন্যদিকে, ‘ছায়ানীড়’কে তারা বোমা মজুদ করার কাজে ব্যবহার করতো। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিইউ) কর্মকর্তারা বলছেন, ছায়ানীড়ে অভিযানের সময় জঙ্গিরা তিন থেকে চার কিলোগ্রাম ওজনের বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ প্রসঙ্গে সিটিটিইউ এর অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) সানওয়ার হোসেন বলেন, ‘ছায়ানীড়ের আত্মঘাতী হামলায় জঙ্গি সংগঠনটির চট্টগ্রাম অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা দুই বোমা বিশেষজ্ঞ নিহত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিহত ওই দুই জঙ্গির কাছে তিন থেকে চার ধরনের বোমা ছিল।’ তিনি আরও বলেন,‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মারতেই জঙ্গিরা নিজেদের শরীরে বেঁধে তিন থেকে চার কিলোগ্রাম ওজনের ওই বিশেষ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।’ পুলিশের দাবি, জেএমবিতে বেশ কিছু বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ জঙ্গি রয়েছে। তারাই গ্রেনেড তৈরির কাজ করে। পুলিশ এখন জেএমবির নতুন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের খুঁজছে, যারা নতুন জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুর-এ আলম মিনা বলেন, ‘জঙ্গিরা স্থানীয় বাজার থেকে বোমা তৈরির উপাদান সংগ্রহ করে থাকতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ জানার চেষ্টা করেছে, তারা কোথা থেকে বোমা তৈরির উপাদান সংগ্রহ করে এবং এক্ষেত্রে তাদের সোর্স কারা। তদন্তে নাম উঠে আসায় এখন কিছু জঙ্গি নেতাকে আটকের চেষ্টায় আছে পুলিশ।’ সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ