বিপ্লব বিশ্বাস: রাজধানীর আশকোনা, খিলগাঁও এবং সর্বশেষ বিমানবন্দর মোড়ে নিহত সন্দেহভাজন তিন জঙ্গির একজনেরও পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। জানা যায়নি সীতাকু-ের আস্তানায় নিহত পাঁচ জনের মধ্যে দুই জনের পরিচয়ও।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেলী ফেরদৌস বলেন, নিহতদের ছবি প্রকাশ করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বজনরা তাদের বিষয়ে তথ্য দিতে চাইছে না। এভাবেও পরিচয় জানা না গেলে বাকিদের বিষয়ে তথ্য পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগে থাকা আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছে। সম্প্রতি নিহত সন্দেহভাজন সাত জন জঙ্গির মধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকু- আস্তানায় নিহত এক দম্পতি ও তার সন্তানের পরিচয় শনাক্ত করেছেন তার স্বজনরা। কিন্তু বাকি কারও আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় জানতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত বছরের জুলাই মাসেও মিরপুরের কল্যাণপুর আস্তানায় নিহত নয় জনের মধ্যে এক জনের পরিচয় জানা যায়নি। একইভাবে গাজীপুরের পাতারটেক ও লেবুবাগান ও টাঙ্গাইলের কাগমারী আস্তানায় নিহত ১৩ জনের মধ্যে বেশিরভাগের পরিচয়ই জানা যায়নি। সর্বশেষ গত ১৭, ১৮ এবং সর্বশেষ ২৪ মার্চ রাজধানীতে নিহত তিন সন্দেহভাজন জঙ্গির পরিচয় জানার ক্ষেত্রেও একইভাবে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা। গত ১৭ মার্চ উত্তরার আশকোনায় র্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে ‘আত্মঘাতী’ বিস্ফোরণে নিহত হন একজন। তার পরিচয় জানতে নানা চেষ্টা চালিয়ে সফল হয়নি র্যাব ও পুলিশ। ইতোমধ্যে একজন নারী নিহত যুবককে তার সন্তান দাবি করে ঘটনাস্থলে গেলেও পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি আসলে তার ছেলে ছিলেন না। র্যাব জানিয়েছে, নিহত যুবককে সন্তান দাবি করা নারীকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে নিজের গ্রামের বাড়িতে পিরোজপুরে ফিরে গেছেন। ওই নারী তার ‘নিখোঁজ’ সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন র্যাবের এক কর্মকর্তা। ১৮ মার্চ খিলগাঁওয়ের শেখের জায়গায় র্যাবের তল্লাশি চৌকিতে হামলা চেষ্টার সময় এক যুবকের মৃত্যুর কথা জানায় র্যাব। তার পরিচয়ও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর এক সপ্তাহ পর গত শুক্রবার রাতে বিমানবন্দর মোড়ে পুলিশের তল্লাশি চৌকি এড়ানোর চেষ্টার সময় এক যুবক তার সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ বাহিনী। তাকেও এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেলী ফেরদৌস বলেন, জঙ্গিদের পরিচয় শনাক্ত করতে না পারার একটি কারণ হলো ভুয়া পরিচয়পত্র। তারা ভুয়া নাম ব্যবহার করে পরিচয়পত্র তৈরি করে বলে একটি পর্যায় পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েও আমাদেরকে খেই হারিয়ে ফেলতে হচ্ছে। এ কারণেও পরিচয় জানতে বিলম্ব হচ্ছে। সম্পাদনা : রফিক আহমেদ