উম্মুল ওয়ারা সুইটি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে এবং শেখ হাসিনা সরকারের সময়ই তিস্তা চুক্তি হবে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে তিস্তা আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও এ নিয়ে দুই দেশের দ্প্রুধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।
সূত্রমতে, তিস্তা ইস্যুতে শেখ হাসিনার ভারত সফর পিছিয়ে পড়ার পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তা বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু ওই আলোচনা শেষ হয়নি।
সূত্রমতে, একদিকে মমতার আপত্তি এবং অন্যদিকে তিস্তার বিষয়ে শেখ হাসিনার ও বাংলাদেশের জনগণের চাপে কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল। ফলে গত বছরের ডিসেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফর বাতিল করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তা ও জঙ্গিবাদ ইস্যু এবং ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে ভারতের কাছে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাই মোদির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, শেখ হাসিনার এবারের সফরে তিস্তা চুক্তি না হলেও এ বছর বা আগামী বছর নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি সই হবে। ওই সফরে মমতা ব্যানার্জিরও আসার কথা রয়েছে।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না কোন কোন চুক্তি হবে। তবে এটা বলা যায়, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আপত্তি নেই। এর আগেও তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, অভিন্ন নদীগুলোর বিষয়ে নিষ্পত্তি যেমন আমরা চাই তেমনি ভারতও চায়। তাছাড়া ২০১৫ সালের জুন মাসে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সরকারই তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায় করবে। এর বেশি আর কিছু বলতে চাই না। পশ্চিমবঙ্গের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে আলোচনা চলছে। মমতার সঙ্গে তিস্তার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনা চূড়ান্ত হয়নি বলে তিনি গণমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মমতা বলেছেন, বাংলাদেশকে তিনি ভালোবাসেন। তবে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ তিনি করবেন না। তিস্তা নিয়ে তার আপত্তি নেই , তবে আলোচনা করে সমাধান করার কথা বলেন।
জানা গেছে, মমতার এসব বক্তব্যের পর গত শনিবার কেন্দ্রীয় সরকার বলেছেন, মমতাসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে। কেন্দ্রী বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে দেশটির গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা না বলে কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে না। কারণ ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর রীতি মেনে কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কের প্রটোকল অনুসরণ করেই এগোতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর গোটা চুক্তির খসড়া রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। সম্পাদনা : এনামুল হক