জঙ্গিদের টার্গেট বিদেশি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: জঙ্গিদের টার্গেট রয়েছে বিদেশি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তারা যে কোনো সময়ে যে কোনো বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা চালাতে পারে। দেশের বিভিন্ন স্থাপনায়ও হামলা করতে পারে। এই আশঙ্কায় সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনা ও ইউনিটেও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সিলেটে গত চারদিন ধরে অভিযান চলছে। অভিযান রোববার শেষ করার কথা চিন্তা করলেও পুরোপুরি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারার কারণে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেটে আতিয়া ভবনে এখনও জঙ্গিরা রয়েছে। অভিযান চলছে। সেই জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
জানা গেছে, সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে তাদের বিভিন্ন ইউনিটে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। যদিও তারা এটাকে রুটিন বলেই অভিহিত করছেন। সূত্র জানায়, এই পর্যন্ত র্যাবের অস্থায়ী ইউনিটে হামলা, চেকপোস্টে জঙ্গি নিহত হওয়া, বিমানবন্দরের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা খুব বড় না হলেও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। সূত্র জানায়, ঢাকার বাইরে বিভিন্নস্থানে ও ইউনিটেও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। সিলেটে জঙ্গির সংখ্যা কম হলেও তাদের শক্তি ও কৌশল জঙ্গি দমনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে।
এদিকে র্যাবের অস্থায়ী একটি ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলা, একটি চৌকিতে এক জঙ্গি নিহত হওয়া, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক সিলেটের অভিযানে আহত হওয়া এবং আরও একজন কর্মকর্তা আহত হওয়ার ঘটনায় র্যাবও সতর্কতা বাড়িয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, জঙ্গিরা কখন কোন স্থানে হামলা করবে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে তারা হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কা সব সময় রয়েছে। বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পর তারা জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, তাদের বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। এই জন্য তারা বিভিন্নস্থানে আস্তানাও তৈরি করেছে। ট্রেনিংও দিচ্ছে। শক্তি সঞ্চয় করছে। কেবল বাংলাদেশে এই সমস্যা বিদ্যমান তা নয়, গোটা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা।
সূত্র জানায়, জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থেকে কোনো দেশই নিরাপদ নয়। জনগণের জানমাল রক্ষা করা ছাড়াও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দেশে অবস্থানরত কূটনীতিক, বিদেশি নাগরিকদের যারা এখানে কাজ করছেন তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ও ভিআইপিদের সহ গুরুত্বপূর্ণ সকল ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ও সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বলা হয়। সেই হিসাবে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
গোয়ন্দাদের কাছে ও পুলিশের কাছে খবর রয়েছে, বিদেশি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হতে পারে। বেশি সংখ্যক মানুষের সমাগম হয় এমন স্থানেও হামলা হতে পারে। এরমধ্যে কারাগার, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও বিমানবন্দরেও হামলা করতে পারে। সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও আটক জঙ্গিরা তাদের পরিকল্পনার প্রাথমিক তথ্য দিচ্ছে। গোয়েন্দার সূত্র ধরে এগুনোর চেষ্টা করছে। তবে জঙ্গিরা বিভিন্ন স্তরে ভিন্ন ভিন্ন যোগাযোগ করার কারণে সব স্তরের জঙ্গিদের বের করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ একটি স্তর তার পরের স্তর সম্পর্কে জানলেও এর পরের বিষয়ে কিছুই বলতে পারে না। এই কারণে শেষ পর্যন্ত কে কাজ করছেন কিভাবে কাজ করছেন, কার নির্দেশে করছেন সেই সম্পর্কে সব সময় জানতে পারছেন না।