‘জঙ্গিবাদ মুক্ত’ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায় স্বাধীনতা দিবস পালিত
আল হেলাল শুভ: ‘জঙ্গিবাদ মুক্ত’ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা নিয়ে সারা দেশে পালিত হলো ৪৭তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের রাজনীতিকরা। জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে জঙ্গিবাদমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ভোর ৬টায় সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রথমে এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশী কূটনীতিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ঢাকা জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শিশু কিশোর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ,সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, চলবে এবং কঠোর হাতে তা আমরা দমন করবো। পরে সেখানে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার সকালে স্বাধীনতা দিবসের সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আসুন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, স্বাধীনতার যারা শত্রু; এদের প্রতিহত করি, প্রতিরোধ করি, পরাজিত করি।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারের স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানায় দলটির নেতারা। এ দিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় বর্ণাঢ্য র্যালি করে বিএনপি।
এ দিকে দেশকে জঙ্গিবাদ থেকে নিরাপদে রাখার প্রত্যাশা নিয়ে দেশের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেনীর মানুষ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করছেন। দিবসে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ও পরিবার-পরিজন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। জঙ্গিবাদ রুখতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান সেই মানুষরা। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মেনন বলেন, দুঃশাসনের ধারাবাহিকতায় দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পেরেছে। এখন সেটা ভয়াবহ আকারে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় এবং দেশের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় রাখা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
জঙ্গিবাদ মুক্ত নিরাপদ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদা পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।
কুমিল্লা: কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পাশাপশি সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, আলোচনা সভা।
জামালপুর: জামালপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম মাঠে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজ এবং সামাজিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ ছাড়া শিশু কিশোররা বিভিন্ন কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শণ করেন।
মেহেরপুর: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেহেরপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে সকাল সাড়ে ৬ টার সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের কলেজ মোড়ে অবস্থিত শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন।
লক্ষ্মীপুর: জেলায় শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
নওগাঁ : বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে নওগাঁয় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। রবিবার সকালে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় নওগাঁ স্টেডিয়াম মাঠে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়। সূর্য্য উদয়ের সাথে সাথে কুড়িগ্রাম স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম ষ্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত শেষে ২০জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সম্পাদনা: এনামুল হক