বিপ্লব বিশ্বাস: রিক্রুটিং, ট্রেনিং এবং অপারেশন এ তিনটি ধাপে চলছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। প্রথম ধাপে রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকা থেকে সদস্য সংগ্রহ করা। দ্বিতীয় ধাপে ওই সব সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে আসা হয় বৃহত্তর চট্টগ্রামে। পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় চলে প্রশিক্ষণ। এরপর তাদের আনা হয় নগরী ও জেলার গোপন আস্তানায়। তৃতীয় ধাপে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণ শেষে পাঠানো হয় অপারেশনে।
এর মধ্যে দিনাজপুর থেকে আসা সোহেল রানা রিক্রুটিং, রাজশাহীর বাগমারার মুসা অপারেশন এবং সাগর নামে অপর একজন জেএমবি সদস্যদের বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। মূলত রাজধানী ঢাকা থেকে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রশিক্ষণ শেষে অপারেশনের জন্য পুনরায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় লাগাতার অভিযানে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম এবং সরোয়ার নিহত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা হয়েছিল সংগঠনটির কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে গেছে। কিন্তু চলতি মার্চ মাসে কুমিল্লার চান্দিনা, চট্টগ্রামের মীরসরাই এবং সীতাকু-ে একাধিক আস্তানা ও বোমা তৈরির বিশাল আয়োজন দেখে পুলিশের সে ধারণা উড়ে গেছে। এখন চলছে জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির সাংগঠনিক তৎপরতা অনুসন্ধানের কাজ। আটককৃত জেএমবি সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে এসেছে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর তিনটি প্রক্রিয়ার নানা তথ্য।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ‘টহল, চেকপোস্ট এবং আরও বিভিন্ন গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা এটা ঠেকাতে পারি। উপরের যারা এদের নিয়ন্ত্রণ করে তারা একটু দূরে থাকে। তাদের এই লিঙ্কটা তদন্তের মাধ্যমে বের করাটা কষ্টের ব্যাপার।’ জঙ্গিদের এ তিনটি ধাপকে ভাঙার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও বেশি কৌশলী হওয়ার পরামর্শ দেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রিক্রুটিং বিভাগের সোহেল রানা, ট্রেনিংয়ের সাগর এবং অপারেশনাল বিভাগের মুসার সন্ধান পাওয়া গেলে বৃহত্তর চট্টগ্রামে জঙ্গি তৎপরতা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি। সম্পাদনা: এনামুল হক