নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না খতিয়ান ডিজিটালাইজেশন সময় বাড়ানো নিয়ে দ্বিমত আইএমইডি
সাইদ রিপন : নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না মৌজা ম্যাপস অ্যান্ড খতিয়ানসমূহের কম্পিউটারাইজেশন প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পটি ২০১২ থেকে ২০১৪ সালে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৪টি খতিয়ান ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করে। কিন্তু পর্যায়ক্রমে মেয়াদ বাড়ার কারণে আর মেয়দ বাড়ানো যাবে না বলে জানিয়েছে আইএমইডি। বর্তমানে প্রকল্পটির এক তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে অনুমোদনের পর এ পর্যন্ত দুই বার মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু প্রকল্পের এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হওয়ায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আরেক দফা মেয়াদ বাড়ানো পরিকল্পনা করছে ভূমি মন্ত্রণালয়। প্রথমে ২০১৪ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ব্যয় বাড়িয়ে ৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা করা হয়। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় আবারও ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপরও শেষ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় ভূমি মন্ত্রণালয় এখন ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে এলেও মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখ খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রি করে সহজে জনগণকে সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও প্রায় সোয়া ৩ কোটি খতিয়ানের ডিজিটালাইজেশনের কাজ করা সম্ভব হয়নি।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ভূমি জরিপ পদ্ধতিতে আইসিটি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ৫৫টি জেলার রেকর্ডরুমের খতিয়ান ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সিএস (সিটি সার্ভে), এসএ (স্ট্রেট অ্যাকুইশন সার্ভে) ও আরএস (রিভিশনাল সার্ভে) জরিপের মোট ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৪টি খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রির কাজ চলছে। কিন্তু মেয়াদ শেষের মাত্র তিন মাস বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ দেড় কোটি খতিয়ানের ডিজিটালাইশেন সম্পন্ন করা গেছে।
এ প্রসঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ও প্রকল্প পরিচালক আবুয়াল হোসেন বলেন, ইএলআরএস সমস্যার কারণে প্রকল্পটি আমরা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে পারছি না। এ সমস্যায় অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ২০১২ সালে ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০১৩ সালের শেষের দিকে ফের ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু হলেও সফটওয়্যারের কিছু সমস্যার কারনে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মূল কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে খতিয়ান সংরক্ষণ এবং ভূমি মালিকদের সহজে সরবরাহ করা। যেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন করে উন্নতমানের সেবা দেওয়া যায়। আগে জমির খতিয়ান পেতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগতো। এখন ডিসি অফিস থেকে একদিনেই খতিয়ান পাওয়া সম্ভব। প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসেও ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমির খতিয়ান সংরক্ষণ করা হবে। জনগণ জমির দাগ নম্বর বললে যেন একদিনেই জমির খতিয়ানের প্রিন্ট কপি সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
এদিকে মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে শেষ সময়ে এসে ভূমি মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। আইএমইডি মনে করছে, একাধিকবার প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। আর মেয়াদ বাড়ানো যাবে না, আগামী জুনের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন না হলে প্রয়োজনবোধে একই ধরনের নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ