বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ ড্র করা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, কেন?
মোস্তফা মামুন
আমার দৃষ্টিতে ভালোই হয়েছে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা সদ্যসমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজটি। আমরা যদি সিরিজটি জিততে পারতাম তাহলে অবশ্যই ভালো লাগত। শেষ ওয়ানডে জয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছিল, সেটা আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। এ নিয়ে একধরনের হতাশা তো আছেই।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ ড্র করা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সন্তুষ্ট। এই সন্তুষ্টির যথেষ্ট কারণও রয়েছে। পাশাপাশি এটাও ঠিক যে, আমরা যেহেতু সিরিজে ফিরেছিলাম, সময়টা আমাদের পক্ষে ছিল তাতে ওয়ানডে সিরিজটা জয় সম্ভব ছিল যদি পরিকল্পনা মতো খেলতে পারতাম ওয়ানডে সিরিজ আমাদেরই হতো।
শেষ ম্যাচে অনেকগুলো জিনিস ঠিকঠাকমতো করা হয়নি বলে আমার মনে হয়েছে। এর মধ্যে সঠিক পরিকল্পনা মতো খেলতে পারিনি আমরা। শ্রীলঙ্কাও বলেছিল, টসে না জেতা তাদের জন্য ভালোই হয়েছিল। যদিও উইকেটে ঘাস ছিল, তবু এ ধরনের উচ্চ চাপের ম্যাচে সুযোগ থাকলে আগে ব্যাট করে নেওয়াই উচিত। বাংলাদেশ সেই ম্যাচটাই জিতছে যে ম্যাচটা আগে ব্যাট করেছে। এমনকি শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ম্যাচে ৩১১ রান করেছিল। সেই ম্যাচটাও তারা জিততে পারত। ওই দুটি ম্যাচের পরিস্থিতি দেখা উচিত ছিল। ২৬০-২৭০ রান করা সম্ভব ছিল। এমন রান চেজ করতে গিয়ে শুরুতেই যদি দুই তিনটা উইকেট পরে যায় তাহলে সমস্যা হবেই। কিন্তুআগে ব্যাট করার সময় দুই তিনটা উইকেট পরে গেলেও সামাল দেওয়া যেত ভালো। ফলে সেই জায়গা হয়তো আমাদের একটু ভুল ছিল। আমাদের বোলারদের লাইন লেন্থ বজায় রেখে বল করতে পারেনি। কারণ তারা হয়তো ভেবেছিলÑ উইকেটই সব করে দেবে! শুরুর দশ ওভারে ৭০ রান হয়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে বাংলাদেশের জন্য।
এখন টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কা ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে। যেহেতু তারা তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটা জিতেছে। এই জায়গাটাতে আমাদের সুযোগ ছিল ওয়ানডে সিরিজটা জিতে টি-টোয়েন্টিতেও শ্রীলঙ্কাকে চাপের মধ্যে ফেলে দেওয়া। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি।
ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে যে পরিমাণ প্রত্যাশা ছিল, টি-টোয়েন্টিতে অত প্রত্যাশা নেই। যদিও সাম্প্রতিকালে টি-টোয়েন্টিতেও আমরা বেশকিছু সাফল্য পেয়েছি। এশিয়া কাপে আমরা ফাইনাল খেলেছি। তারপরও আমরা কাছে মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে এখনো আমাদের ভালো খেলা হয়ে ওঠেনি বা আমরা টি-২০ খেলার জন্য আদর্শ হয়ে উঠিনি। এটার বড় কারণ হচ্ছে আমাদের খেলোয়াড়রা ভালোভাবে খেলতে পারে না। যেকোনো কন্ডিশনে ২০ বলে ৫০ রান করে ফেলবে, ১৫ বলে ৩০ রান করে ফেলবে এমন খেলোয়াড় আমাদের খুব বেশি নেই। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে অন্য দলগুলোতে ৩-৪ জন এমন প্লেয়ার থাকে, সে জায়গায় আমরা একটু পিছিয়ে।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব ক্ষেত্রেই আমাদের প্লেয়ারদের একটু ভালো করতে হবে। টি- টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কা আমাদের চেয়ে একটু এগিয়ে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নেই এমনটিও নয়। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশেরও ভালো খেলার সামর্থ বাড়ছে দিন দিন। আশা করছি, এই সিরিজে তার প্রতিফলন দেখা যাবে।
পরিচিতি: সাংবাদিক ও ক্রীড়াবিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান