সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের অপেক্ষায় পাঁচ শতাধিক জনবল
এস এম নূর মোহাম্মদ: বিভিন্ন বিভাগের জন্য প্রায় পাঁচ শতাধিক জনবল নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে নানা সময়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রায় আড়াই বছর ধরে এসব চিঠি চালাচালি হলেও এখনো নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন আইন, অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে গতবছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ৪৯৮টি পদ সৃষ্টি করতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রিসার্চ ইউনিটের জন্য ২৪টি পদ সৃষ্টি করতে ২৩ জুন ২০১৫ সালে চিঠি দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় হয়ে যা এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জন্য ১০০ নিরাপত্তা প্রহরী এবং ১০০ বাবুর্চি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয় ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর। বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় থেকে এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ অনুবিভাগে রয়েছে।
হাইকোর্ট বিভাগের জন্য নিরাপত্তা প্রহরী, মালি ও পরিচ্ছন্ন কর্মী মিলে মোট ১৬০টি পদ সৃষ্টি করতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চিঠি দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি পাঠানো হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭৩টি পদ অনুমোদন করে অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠায়। বিষয়টি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ অনুবিভাগে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের জন্য ১৬টি মাইক্রোবাস অন্তর্ভুক্ত করে তার জন্য ১৬ জন চালকের পদ সৃষ্টি করতে গতবছরের ২৪ মার্চ চিঠি পাঠানো হয়। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪টি মিনিবাস ও ৪টি মাইক্রোবাস প্রদান করতে সম্মতি দেয়। যা এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পড়ে রয়েছে। অতিরিক্ত রেজিস্ট্রারের ৪টি পদ সৃষ্টি করতে চিঠি পাঠানো হয় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। যা এখন আইন মন্ত্রণালায়ে রয়েছে। আর সহকারী রেজিস্ট্রারের ৪টি পদ সৃষ্টি করতে ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন। হাইকোর্ট বিভাগের ডে-কেয়ার সেন্টারের জন্য একজন ডে-কেয়ার কর্মকর্তা, ২ জন সহকারী শিক্ষিকা, ২ জন স্বাস্থ্য শিক্ষিকা, ৫টি আয়া, ২ জন বাবুর্চি, ২ জন নিরাপত্তা প্রহরী এবং ২ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদ সৃষ্টি করতে চিঠি পাঠানো হয় গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর। বিষয়টি এখনো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের জন্য ছাপাখানা স্থাপন এবং পরিচালনার জন্য ৩৯টি পদ সৃষ্টি করতে গত বছরের ৮ নভেম্বর চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। যা এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর জেলা ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য একজন কোÑঅর্ডিনেটর চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় ২০১৫ সালের ৩১ মে। বিষয়টি এখনো আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. সাব্বির ফয়েজ এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা নানা সময় জনবল নিয়োগের জন্য চিঠি দিয়েছি। দারোয়ান না থাকায় প্রবেশপথগুলোতে সমস্যা হচ্ছে। বিচারপতিদের জন্য নিরাপত্তা প্রহরী এবং বাবুর্চি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এগুলো না থাকায় তাদের নিরাপত্তা এবং রান্নার কাজে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিশাল আয়তন। পরিচ্ছন্ন কর্মী ও মালি না থাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সমস্যা হচ্ছে। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বাগান ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব প্রেস না থাকায় বিজি প্রেসে ছাপার কাজ করতে হচ্ছে। তবে জনবল নিয়োগ হলে নিজস্ব প্রেস চালু হবে। সেক্ষেত্রে দ্রুত ছাপার কাজ সম্পন্ন শেষে মামলা শুনানি করা যাবে। আড়াই বছর যাবত চিঠি চালাচালি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে। জনবল নিয়োগ হলে কাজের গতি আরও বাড়বে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। সম্পাদনা: গিয়াস উদ্দিন আহমেদ