ব্যস্ত সময় পার করছেন কাহারোলের মৃৎশিল্পীরা
সাইফুল ইসলাম, কাহারোল (দিনাজপুর) : আর মাত্র কয়দিন পর বাংলা নববর্ষ। নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখ মাস জুড়েই গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে বৈশাখী মেলা। আর এই মেলাকে সামনে রেখে নিপুন হাতে মাটি দিয়ে তৈরী হাতি, হাড়ি-পাতিল, ঘোড়াসহ নানা ধরনের বাহারী শিল্প তৈরি করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কাহারোল উপজেলার পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা।
দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রাজুরিয়া মহেশপুর ও পূর্ব সুলতানপুর গ্রাম। এই ২টি গ্রাম উপজেলার পরিচিত পাল পাড়া হিসাবে। গ্রাম ২টিতে প্রায় ১ শ পরিবার রয়েছে মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত। পৈত্রিক ভিটা মাটিতে বাপ-দাদার পেশাকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তারা পূর্বে থেকেই। অনেকে আবার এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন দিন দিন। ফলে দিন দিন মৃৎশিল্পের সংখ্যা কমে যা”েছ। যে কয়েকজন শিল্পী রয়েছে বৈশাখ মাসে তারা মাটির জিনিসপত্রাদি তৈরীতে ধুম পড়ে যায় তাদের উপর। সুলতানপুর গ্রামের রহিনী কুমার পাল জানান, ১ শ টি পরিবার পহেলা বৈশাখ ও বৈশাখী মেলা উপলক্ষে তাদের নিপুন হাতে তৈরি নানা রঙ্গের বাহারী মাটির জিনিস ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে মেলা চলাকালীন সময়ে। বছরের মধ্যে বৈশাখ মাসেই তাদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে।
বৈশাখ উপলক্ষে প্রতিটি ঘরে মাটির তৈরী বাঘ, হাতি, ঘোড়া, হরিণ, কাঁঠাল, আম, কলস, ব্যাঙ, পিঠা তৈরীর নানা ছাচ তৈরী করছেন আর রোদ্রে শুকাচ্ছেন। চৈত্র মাসের শুরু থেকে তারা এসব শিল্পকর্ম তৈরী শুরু করেছেন, চলবে চৈত্র মাস পর্যন্ত। এদিকে রাজুরিয়া মহেশপুর গ্রামের লাকি রানী পাল জানান, এখন মাটি, লাকড়ি, রং, কাড়ি,সহ সবকিছ্ইু ক্রয় করতে হয়। ১ কাঠা জমির সর্বোচ্চ ৮ ইঞ্চি পরিমাণ গভীর করে মাটি কেঁটে আনতে জমির মালিককে দিতে হয় ৫-৭ হাজার টাকা। ১ কাঠা জমির মাটি দিয়ে তৈরি জিনিস পত্রের জন্য রং কিনতে কমপক্ষে ৪ হাজার টাকার অধিক। একসময়ে এসব কিছুই কিনতে হত না। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান