ব্রেক্সিটে ভারতের সঙ্গে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বেড়েছে ব্রিটেনের
আসাদুজ্জামান আকাশ: ব্রেক্সিট শুরুর পর থেকে ব্রিটেন প্রতিবছর ভারতে ২ বিলিয়ন ইউরোর অধিক রপ্তানি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। ইইউ’র বাণিজ্য চুক্তি প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে এটি সম্ভব হবে বলে এক নতুন বিশ্লেষণে জানা যায়। সোমবার এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা টেলিগ্রাফ এই তথ্য জানায়।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর সংস্থাটির সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এর মাধ্যমে ভারত-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক চুক্তি জোরদার করতে ব্রেক্রিট ভারতের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
আর যুক্তরাজ্য ইইউ’র সাথে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোতে ধীরগতি হওয়ায় এটি ভারতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সময় বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা ভারতে ১৪.৮ শতাংশ শুল্কমূল্যে পণ্য রপ্তানি করে। আর ভারতের ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ওই শুল্কের পরিমাণ গড়ে ৮.৪ শতাংশ। আর এই রপ্তানিশুল্ক আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে, এখন যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগ করায় সংস্থাটির জারি করা নিয়ম মানতে বাধ্য নয়।
বিষয়টি নিয়ে কমনওয়েলথ ‘ব্রেক্সিট ঃ ভারতের জন্য সুযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ব্রিটেন ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে পারলে দেশটি (ব্রিটেন) প্রতি বছরে ২ বিলিয়ন ইউরোর অধিক ভারতে রপ্তানি করতে সক্ষম হবে এবং ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে আমদানি প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরোর কাছাকাছি বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে বাণিজ্যে যুক্তরাজ্যের ভারসাম্য উন্নত হবে এবং দুটি দেশই লাভবান হবে।
কমনওয়েলথের ওই প্রতিবেদনের লেখক রেশমি বঙ্গ বলেন, ইইউ’র পূর্বে যুক্তরাজ্য ভারতের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করলে তা ব্রিটেনকে বাড়তি সুবিধা দিবে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য ও ভারতের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার আলোচনা থেকে সহজতর হবে।
বিষয়টি নিয়ে সাবেক ব্রিটিশ রক্ষণশীল নেতা আয়ান ডালকান স্মিথ বলেন, ‘কিছু কিছু সময় একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। আর ওই চুক্তিটি যদি ২৭টি দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করতে হয় তাহলে তা চিরকাল লাগবে।’
তবে একটি দেশের সাথে চুক্তি করতে গেলে বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে যায় এবং সেই ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পন্ন করতে কয়েক মাসের বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ইইউ ত্যাগ করার পর আমরা সংস্থাটির যে নিয়মকানুন আমাদের স্বার্থে প্রয়োজন হবে না তা ত্যাগ করতে পারবো। ব্রিটেনের জন্য তখন যা সেরা আমরা তাই করবো।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের রক্ষণশীল নেতা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সচিব লিয়াম ফক্স বর্তমানে ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা করছেন। ভারত ছাড়াও তিনি চীন, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন। টেলিগ্রাফ ও ডেইলি এক্সপ্রেস অবলম্বনে