মেয়েদের মাঝে মাঝে একা চলতে দিন
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: কম বয়স থেকেই মেয়েদের একা চলার অভ্যাস তৈরিতে পরিবারকে সহযোগিতা করতে হবে। না হলে হঠাৎ করে একটা মেয়ে একা চলতে গিয়ে নানা ধরনের নতুন নতুন বিষয়ের সম্মুখীন হয়। সে সামাজিকভাবে নিজেকে চালিয়ে নিতে পারে না। চেনা জগৎও তার কাছে নতুন মনে হয়। ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে চলতে চলতে নিজেকে পরনির্ভরশীল করে ফেলে।
সেই মেয়ে যখন একা পথে নামে তখন সবই অন্যরকম মনে হয়। বিশেষ করে, কোনো ধরনের ইভটিজিং এবং পথে চলতে যেসব অপ্রাসঙ্গিক বিষয় ঘটে সেটির মোকাবিলা করতে পারে না মেয়েটি। ফলে অল্পতেই ভেঙে পড়ে। একা চলার ভীতি তৈরি হয় সেই মেয়ের মধ্যে। তাই সন্তান ছেলে হোক আর মেয়ে হোক তাকে একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকেই একা চলাফেরার অভ্যাস গড়ে তোলার সুযোগ দিতে হবে।
কলাবাগান স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমানা হাশিম বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকেই রুমানা স্কুলে এবং কোচিং-এ একা একা যাওয়া-আসা করে। তবে মাঝে মাঝে মা না জানিয়েই স্কুলের গেটে বা কোচিং-এ আসেন। একা ছাড়লেও মনিটরিংটা আছে। তবে আমার অনেক বান্ধবী আছে, যাদের এক মুহূর্তের জন্যও ফ্যামিলি হাতছাড়া করে না। তাদের দেখি মন খুব খারাপ করে। আবার কদাচিৎ যদি তাদের একা স্কুলে আসতে হয়, তাহলে তো নানা ঝামেলা। অমুক এভাবে তাকিয়েছে তমুক এটা করেছে। অনেকে আবার রাস্তায় তুলকালাম কা- বাঁধিয়ে দেন। কারণ তারা বিষয়গুলো ফেইস করে না। আমি প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে ইভটিজিংয়ের শিকার হই। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করি। আর বেশিরভাগ সময় হেঁটে চলে আসি। কারণ আমি বুঝি এই সবের কোনো প্রতিকার নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের মানুষগুলোর মধ্য সুমতি না হবে, ততদিন এরা অসভ্য আচরণ করবে। এখন আমার বান্ধবীরা অনেকে বলে, তুই কিভাবে একা চলিস, অসম্ভব। আবার আমার এসব বান্ধবী একা চলার ভয়ে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে চলে। সেই নিয়ে আরেক ঝামেলা। আমি আমার মা-বাবার কাছে কৃতজ্ঞ। তারা যে আমাকে ছোটবেলা থেকেই একা চলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।