বৈশাখ ও জানালার গল্প
রেজাউদ্দিন স্টালিন
একদিন বিকালে বৈশাখ গলা বাড়িয়ে দিলো ঘরে ঘরে
আর দেয়ালগুলো ভয়ে জাপটে ধরলো ঘরকে
তবু ঘর দুলে উঠলো শঙ্কায় আর শক্ত করে ধরলো জানালার হাত
কিন্তু জানালার প্রতি তার আস্থা নেই মোটে
মনে আছে, একবার জ্যোৎ¯œা দেখে মোম হয়ে গলে গিয়েছিলো
একবার বৈশাখের হাত ধরে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো দিগন্তে
একবার ক্লিওপেট্টার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলো
আরেকবার যখন রোম ঢুকে যাচ্ছিলো গ্রীসের মধ্যে
এশিয়া আফ্রিকার মধ্যে
ভারতবর্ষ চীনের মধ্যে
তখন বন্দি সক্রেতিসকে যিশুকে স্পার্টাকাসকে
গৌতম বুদ্ধকে পালাতে সাহায্য করেছিলো
মনে আছে প্লেটোর কবি নির্বাসনের তত্ত্ব
কবিদের কাছে ফাঁস করে দিয়েছিলো
আর হিমসিম খাচ্ছিলো-পেল্টাগন, র, কেজিবি
কি তুলকালাম কা-
হোমার, দান্তে, শেক্সপিয়র, ইয়েটস, নজরুল
রবীন্দ্রনাথ, র্যাবো
একযোগে পৃথিবীর পথে পথে প্লেটোকে হত্যার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলো
স্বয়ং তাদের সাহায্য করেছিলো বৈশাখপুত্র প্রমিথিউস আর ভ্রাতা অর্জুন
মনে নেই প্লেটো আত্মরক্ষার জন্য এথেন্স থেকে
এরিস্টোটলকে ইমেল করেছিলো ম্যাসিডোনিয়ায়
এরিষ্টোটল তাঁকে বাঁচানোর জন্য আলেকজান্ডারকে
ফ্যাক্স করলো ভারতবর্ষে
কি ভয়াবহ কা-টাই না হলো দু’হাজার বছর ধরে
এরপরও ঘর কি করে জানালাকে বিশ্বাস করে
তাড়াতেও পারে না-সহোদরের অংশীদারিত্ব নিয়ে কথা
ঘর একবার পার্সিউসকে বলেছিলো জানালাকে শায়েস্তা করো
গর্গনদের দেশ থেকে মেডুসার মু-ু নিয়ে প্রত্যাবর্তনের পথে
পার্সিউস মেডুসার কর্তিত মস্তক মেলে ধরলো জানালার সামনে
আর জানালার গ্রীবা ও শরীর সাথে সাথে পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেলো
কিন্তু তার চোখ দুটো ছিলো তখনো অক্ষত
বৈশাখ এলেই সে খুলে দেয় তার দৃষ্টির দীর্ঘ দরোজা
আর পালিয়ে যায় বিস্ময়ের দিকে