আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতির চাহিদা পূরণে হালাল খাদ্য-সামগ্রী আহরণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং হারাম উপার্জন থেকে বারণ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে, হে মানবজাতি! তোমরা দুনিয়াতে হালাল খাবার খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ ও অনুকরণ কর না। বস্তুত সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা- বাকারা: ১৬৮) আরো ইরশাদ হচ্ছে, তোমরা মাপ এবং ওজনে পূর্ণ করে দাও এবং লোকদের পণ্যগুলো কমিয়ে দিয়ো না। (সূরা- হুদ: ৮৫)
এরূপ অসংখ্য আয়াত এবং হাদিসে হালাল খাবার উপার্জন ও হারাম থেকে বারণ করেছেন। বরং হারাম উপার্জনে কঠিন হুঁশিয়ারি বাক্য এসেছে। হাদিস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি অন্যের এক বিঘত জমিন অন্যায় ভাবে হস্তগত করে, হাশরের ময়দানে তার কাঁধে সাত যমিন পরিমাণ ওজনের মালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী, মুসলিম) অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, কিয়ামত দিবসে অন্যায়-অনাচার অত্যন্ত কঠিন চিন্তা-পেরেশানীর কারণ হবে। (বুখারী) আরো বলা হয়েছে, তোমরা অন্যায় কাজ থেকে বিরত হও কেননা, একটি অন্যায় অসংখ্য বিপদ আবর্তনের কারণ হয়। লোভ-লালসা থেকে দূরে থাক, কারণ লোভই পূর্বের জাতিদেরকে ধ্বংসের ফাঁদে নিমজ্জিত করেছে। কেননা, তা মারামারি-কাটাকাটি ও হারামকে হালাল বুঝতে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলে না। (মুসলিম)
মোট কথা, হালাল রুজি উপার্জনে কোন বাধা নেই বরং তা উপার্জনে উৎসাহ এবং নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে মানুষ দুনিয়াপূঁজারী ও ধন-সম্পদ একীভূত করণে মত্ত থাকায় হালাল উপার্জন দুঃসাধ্য হয়ে পরেছে। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও হালাল খাবার উপার্জন সাধ্যাতীত হয়ে পরেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, খেত-খামার ও চাকুরীজিবীদেরসহ বিভিন্ন পদের লোকদের দিকে লক্ষ করি, দেখতে পাবো- সুদ, ঘুষ, আর অবৈধ ব্যবসার সমাহার। জীবনোপকরণ ও উপার্জনে জনসাধারণ এবং অদূরদর্শীরা মনে করে এ ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান মেনে চলা অসম্ভব। ফলে মানুষ হালাল পন্থা থেকে বিচ্যুত হয়ে হারাম পন্থা অবলম্বনে বেপরোয়া এবং ধৃষ্টতামূলক আচরণ করে যাচ্ছে। অথচ ইসলামী বিধানে যৎসামান্য ফিকির করলে দিবালোকের ন্যায় এ বিষয়টি ফুটে উঠবে ইসলামী বিধানই প্রকৃত বিধান ও জীবনব্যবস্থা, অকাট্য ও সর্বজন স্বীকৃত।
যা ধনী-গরীব, সাদা-কালো সকল ব্যক্তির মাঝে সমানভাবে বিবেচনা করে। নিজের জীবনের সর্বক্ষেত্রে, প্রতিটি মূহুর্তে ইসলামী জীবনব্যবস্থা অনুসরণ ও অনুকণের চেষ্টা করা উচিত। আমরা হালাল উপার্জনের পন্থা অবলম্বন করবো এবং লোভ-লালসা পরিহার করবো। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন আমীন।