লিখিত চিঠির অপেক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক হাওর অঞ্চলে কৃষিঋণ ও সুদ স্থগিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
জাফর আহমদ: হাওর অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই জেলার কৃষকের ঋণ ও সুদ আদায় স্থগিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশনের চিঠির অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দিলেই বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ও তাদের কাছে বিতরণ করা ঋণের তথ্য সংগ্রহ শুরু করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্চের মাঝামাঝি সময়ে উজানের পানির ঢলে সিলেট, সুমানগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাওর অঞ্চলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আগেই পানি চলে আসায় তলিয়ে গেছে লাখ লাখ একর জমির ফসল। হাওর এলাকায় বছরে একবারই ফসল ফলে এবং ওই অঞ্চলের অর্থনীতি এই ধানের ওপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় হঠাৎ বন্যায় ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। সাম্প্রতিক পাহাড়ী বন্যায় এসব ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে বিভিন্ন মহল থেকে এ সব কৃষকের পাশে দাঁড়ানোর দাবি উঠে। রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ এ সব এলাকা সরেজমিনে দেখে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৩ এপ্রিল হাওর অঞ্চলের এ সব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে দাঁড়াতে বিতরণকৃত কৃষিঋণ ও সুদ আদায় স্থগিত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুসন্ধান করলে জানা যায় এ সব অঞ্চলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানার জন্য এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করেনি। এ ব্যাপারে অফিসিয়াল নির্দেশনা না পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করতে পারবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক হিসাবে হাওর অঞ্চলের দুই জেলায় প্রায় এক হাজার একশ কোটি টাকা কৃষিঋণ হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে। যা মোট ঋণের প্রায় ৩ শতাংশ। সারা দেশে কৃষকদের মাঝে বিতরণকৃত মোট কৃষিঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার ৬৬৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায়ের অপেক্ষায় আছে ১৯ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৬৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি টাকার কৃষিঋণ হাওর অঞ্চলের কৃষককের কাছ থেকে আদায়ের অপেক্ষায় আছে। এ ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণও রয়েছে। এ হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণের তথ্য ভা-ারের ডেটা থেকে প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত। চূড়ান্ত তথ্যে এ টাকার কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। নির্দেশনা পেলেই আমরা সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকে এ ব্যাপারে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে। তারপর ব্যবস্থা। সম্পাদনা: এনামুল হক