কিরণ সেখ: বিএনপিতে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে, আপনারা এখানে বসে একে অপরের সাথে শুধু কথা বলছেন, কেউ নেতাদের বক্তব্য শুনছেন না। যখন আপনাদের প্রিয় নেতা বক্তব্য দিতে উঠেন, তখন উঠে শুধু সেøাগান দিচ্ছেন। দলে এই অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে, এটা বন্ধ করতে হবে। আর এই সেøাগান শুধু উত্তর- দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম। কিন্তু বিএনপিতে উত্তর ও পশ্চিম বলে কিছু নেই, বিএনপি একটাই। এছাড়া এ অনুষ্ঠান যাকে নিয়ে আয়োজন, সেই ইলিয়াস আলীর নামে কোনো সেøাগান নেই। এ সময় নেতাকর্মীরা ইলিয়াস আলীর নামে সেøাগান দিলে মির্জা ফখরুল বলেন, বন্ধ করুন। এই সেøাগান আগে দিলে খুশি হতাম।
গতকাল সোমবার রাজধানী ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে সিলেট বিভাগ সম্মিলনী আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর গুমের ৫ বছর আজ। তাকে ফিরে পাওয়ার দাবি’ শীর্ষক এ সভায় তিনি বলেন, আমাদের কাছে হিসাব মতে, এ পর্যন্ত রাজধানীতে ৫০ জনসহ সারাদেশে বিএনপির ৫শর অধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। কিন্তু সরকার এখনো এ বিষয় অস্বীকার করছে। তবে প্রমাণ আছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদেরকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ইলিয়াস আলীর বিষয়ে আমরা আরও শক্ত অবস্থান নিতে পারতাম। ওই সময় আমরা অবরোধ দিয়েছিলাম। সেটা সফলভাবে পালিতও হয়েছে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে যেতে পারতাম। এতে ইলিয়াসকে ফিরে না পেলেও বিশ্বের কাছে সরকারের মুখোশ উন্মোচন হতো। এ সময় তিনি ইলিয়াসের বিষয়ে আয়োজক সংগঠনকে আন্তার্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি আপনাদের সহযোগিতা করবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইলিয়াস আলীদের গুমের ব্যথা ও অনুভব নিয়ে কেন যেন আমরা বারবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হচ্ছি। আমাদের কোথায় সমস্যা? যে কারণে এ অপশক্তি এখনো টিকে আছে, এগুলো আমাদের খুঁজে বের করে এ অপশক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানি আনতে পারেননি। কারণ সেই ক্ষমতা নেই। ভারতের কাছে পানি চাইতে সাহস পাননি। কারণ তাদের গণভিত্তি নেই। তাই ভারতের সাথে তারা কোনো দর-কষাকষি করতে পারবে না। তিনি বলেন, শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা আমাদের দরকার। কিন্তু এই নতজানু ও সেবাদাস সরকার জনগণের এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা আলমগীর বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই। আর এটা দিতে হবেই, দিতে হবেই এবং দিতে হবেই।
যুব দলের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এনাম আহমেদ চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: এনামুল হক