উম্মুল ওয়ারা সুইটি: সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভাস্কর্য অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা বা ঈদগাহ মাঠ থেকে নামাজরত অবস্থায় যেন চোখে না পড়ে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হার সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনায় কয়েকজন মন্ত্রী প্রসঙ্গটি তুললে প্রধানমন্ত্রী এই তথ্য জানান। শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হার সঙ্গে একান্তে কথা হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত বিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতিকে বলা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া দুই জন মন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু ভাস্কর্যের বিষয়টি উত্থাপন করেন। প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,শনিবার জাজেস কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করতে গিয়ে আপনি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্যটি সরাতে বলেছেন। এসময় কয়েকজন মন্ত্রীও বিষয়টির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘ন্যায়বিচারের প্রতীক গ্রিক ভাস্কর্য জাস্টিসিয়া’ করা হয়েছে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই। ন্যায়বিচারের প্রতীক গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য বানালেও সেটিকে আবার শাড়ি পরানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় প্রশ্ন রেখে বলেন, গ্রিক দেবী কি শাড়ি পরতো। তিনি বলেন, ভাস্কর্যটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়া অবস্থায় চোখে পড়ে। এটি আসলেই দর্শনীয় কোনো ভাস্কর্য নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত শনিবার প্রধান বিচারপতিকে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। এও বলেছেন, ভাস্কর্যটি দর্শনীয় হয়নি। এটি নিয়ে বিতর্কও আছে। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন’ জানান শেখ হাসিনা।
হাইকোর্টের সামনে এই ভাস্কর্যটি স্থাপনের প্রতিবাদে বেশ কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামি দল। গত ১০ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামীর চেয়ারম্যান আহমেদ শাহ শফীর নেতৃত্বে কওমি মাদ্রাসার শীর্ষ আলেম ওলামারা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন। এই বৈঠকে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ইন ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যারাবিকের সমমান দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণে দাবি জানিয়ে আসা আলেম ওলামাদেরকে এই বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন। এরপর গত শনিবার বিচারপতিদের বাসভবন উদ্বোধন উপলক্ষে কাকরাইল গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। সম্পাদনা: এনামুল হক