নাঈমুল ইসলাম খান
ঢাকা শহরে কথিত সিটিং সার্ভিস বন্ধ করতে হঠাৎ এত তোলপাড় কেন বুঝতে পারছি না।
সংবাদপত্র একটি অভিযোগে বলছেÑ সিটিং সার্ভিস বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। আরেকটি অভিযোগ, সিটিং সার্ভিস দাবি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার পরও সেই বাসগুলো দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন করে। দুটো সমস্যার জন্য সকলে সিটিং সার্ভিসটিই কেন তুলে দিতে চাচ্ছেন সেটাও বুঝতে পারছি না।
ঢাকা শহরের রাস্তায় লোকাল নন-এসি বাসগুলোর মধ্যে কিছু বাসে যদি দাঁড়ানো প্যাসেঞ্জার না নিয়ে, যাত্রীদের ঘাড়ের উপরে দাঁড়ানো লোকজনের ঠাসাঠাসি থেকে মুক্ত, যদি কিছুটা স্বস্তিকর যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকে তবে সেটাতো ভালো। এক্ষেত্রে দাঁড়ানো প্যাসেঞ্জার না নিয়ে যে আর্থিক ক্ষতি হয় সেটা পুষিয়ে নিতে সিটিং সার্ভিসের ভাড়া ন্যায়সঙ্গত ভাবেই সাধারণ লোকাল বাসের ভাড়ার থেকে বেশি হতে হবে। সিটিং সার্ভিসের জন্য সেই বেশি ভাড়াটা কত হতে পারে সেটা সরকারিভাবে নির্ধারিত হয়নি। সকল পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সেটা নির্ধারণ করে দিলেই চলে।
সিটিং সার্ভিস বাসে কারো কারো ভাষায় চিটিং চলে, অর্থাৎ দাঁড়ানো প্যাসেঞ্জারও নেওয়া হয়। এই সমস্যার সমাধান তো সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া নয়, এর সমাধান আছে সিদ্ধান্তের কঠোর প্রয়োগে। প্রয়োজনে সিটিং সার্ভিস বাসের গায়ের রং নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। তখন ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়ানো প্যাসেঞ্জার দেখলেই বাসটিকে ধরতে পারবে, শাস্তি দিতে পারবে, জরিমানা করতে পারবে এবং চিটিংমুক্ত সিটিং সার্ভিস নিশ্চিত করতে পারবে।
অফিস শুরু ও শেষের সময় যেটাকে আমরা ‘রাশ আওয়ার’ বলি তখন সিটিং বাসে যাত্রী সংকুলান হয় না, দীর্ঘ লাইনে মানুষ অপেক্ষমাণ থাকে, এর জন্যে কেন গোটা সিটিং সার্ভিসই বন্ধ করে দেওয়া হবে? পরিবহন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে রাশ আওয়ারে সবধরনের বাসের সংখ্যা বাড়ানোই তো যথার্থ সমাধান।
বাসে সিটিং সার্ভিস ঢাকার মাঝবয়সী নারী-পুরুষ এবং মধ্যবিত্ত নাগরিকদের মধ্যে যারা একটু বেশি ভাড়া দিয়ে স্বচ্ছন্দে বা আরামে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য খুবই উপকারী। সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে বিনীত নিবেদন, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে সব দিক, ভালো-মন্দ বিবেচনা করে বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষের মতামত নিন। সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন।