ভুটানে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা
ডেস্ক রিপোর্ট : অটিজম বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ৩ দিনের সরকারি সফরে ভুটান পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সেখানে পৌঁছলে বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে লালগালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়। অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বিষয়ক ৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে শুরু হবে। বাসস
তিনদিনের সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরবেন। ভুটানে পৌঁছার পর বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান সেদেশের প্রধানমন্ত্রী তেসেরিং তোবগের ও থিম্পুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিষ্ণু রায় চৌধুরী। এ সময় তাকে দুটি শিশু প্রথমে ফুলের তোড়া এবং পরে প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক খাদার (স্কার্ফ) উপহার দেয়া হয়। ভুটানের সেনা সদস্যরা গার্ড অব অনার দেয় এবং তিনি গার্ড পরিদর্শন করেন। এ সময় দুদেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
বিমানবন্দর থেকে বর্ণাঢ্য মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে প্রধানমন্ত্রীকে লা মেরিডিয়ান থিম্পু হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ভুটান সফরকালে সেখানে অবস্থান করবেন। সেখানে ভুটানের রয়েল প্রিভি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লিয়েনপো চেনকাব দর্জি শেখ হাসিনাকে অর্ভ্যথনা জানান। প্যারো বিমানবন্দর থেকে ভুটানের রাজধানীর ৭০ কিলোমিটার সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষ এবং শিশু-কিশোররা দুই দেশের পতাকা হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানায়।
সম্মেলন উপলক্ষে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে স্বাগত জানিয়ে ভুটানের রাজধানী শহরকে বাংলাদেশ ও ভুটানের পতাকা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর বড় আকারের প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
ভুটানের রাজা জিগমে ন্যামগেল ওয়াংচুক ও রানী জেটসান পেমার সঙ্গে ভুটানের রাজপ্রসাদে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং তোবগে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে দুই দেশের মধ্যে জলবিদ্যুৎ, যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে ৬টি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। শেখ হাসিনা ‘হেজো’তে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করবেন।
আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অটিজম ও নিউরোডেভলপমেন্ট ডিসঅর্ডার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গেস্ট অব অনার হিসেবে যোগ দেবেন। দুপুরের পরে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে ভুটানের রাজা ও রানীর দেয়া এক ব্যক্তিগত ভোজেও যোগ দেবেন। বিকেলে শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে অটিজম ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্ট সমস্যার যথাযথ সমাধানে সক্ষমতা অর্জন শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
বাংলাদেশ ও ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন (সাবেক গ্লোবাল অটিজম), অ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি (এবিএস) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কার্যালয়। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছেÑ ‘এএসডি ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্টাল সমস্যায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জন্য কার্যকর ও টেকসই বহুমুখী কর্মসূচি’।
সম্মেলনে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান ছাড়াও কয়েকটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারি নেতৃবৃন্দ, নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞরা সম্মেলনে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কৌশলগত দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বিষয়ক সরকারের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী