ভেতরে ভেতরে আমরা কামনা কবলিত ষাঁড়
স্বকৃত নোমান
ফেসবুকে মেয়ের আইডি দেখলেই বুঝি বুনো গয়ালের মতো ইনবক্সে হামলে পড়তে হয়? মেয়েটি আমার কন্যার মতো কি না, নাতনির মতো কি না, ছোট বোনের মতো কি না, বন্ধুর ছোটবোন কি না, সে আমাকে বড়ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করে কি না, সে আমাকে লেখক-কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী হিসেবে শ্রদ্ধার আসনে রাখে কি না, সে আমার সঙ্গে আদৌ প্রেম-ভালোবাসায় জড়াতে চায় কি নাÑ এসব বিবেচনায় না রেখেই, তার সম্মতি-অসম্মতির তোয়াক্কা না করেই বুঝি তাকে প্রেমের প্রস্তাব, শোয়ার প্রস্তাব দিয়ে বসতে হয়?
পুরুষের জন্য নিঃসন্দেহে নারী অনুপ্রেরক। কিন্তু নারীটি অনুপ্রেরকের ভূমিকায় আসতে চায় কি না, তার মতামত তো নেওয়ার দরকার আছে। তার মতামতের তোয়াক্কা না করেই যখন তাকে আমি কোনো প্রস্তাব দিচ্ছি, তখন আমার মধ্যে আর একটা পশুর মধ্যে তফাৎটা থাকল কোথায়? মেয়েদের ইনবক্সে গিয়ে অযাচিত প্রস্তাব দেওয়াটাও এক ধরনের সামাজিক অপরাধ। এক ধরনের ইভটিজিং।
আমরা বাইরে মানবতার কথা বলি, নারী অধিকারের কথা বলি, কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমরা কামনা-কবলিত ষাঁড়। আমাদের সকল শিক্ষা শেষ পর্যন্ত পশুত্বের কাছে বিকিয়ে দিই। নারীমাত্রই আমাদের কাছে যৌনসঙ্গী। এর বাইরে নারীকে আমরা অন্যকিছু ভাবতে পারি না। আমরা সবকিছু হতে পেরেছি, কিন্তু মানুষ হতে পারিনি।
লেখক: কথাসাহিত্যিক/ফেসবুক থেকে