সাক্কুর গ্রেফতারি পরোয়ানার একদিন পর ইসির গেজেট প্রকাশ
সাইদ রিপন : দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার একদিন পরে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। সাক্কুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় আভিযোগ থাকায় গেজেট প্রকাশে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। এদিকে একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর সাক্কু আত্মগোপনে রয়েছেন। একাধিকবার
যোগাযোগ করেও দেখা গেছে তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। ইসি জানায়, ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর নির্বাচিত মেয়র সাক্কুর নাম-ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শপথ নেওয়ার বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেখবে। ইসির অনুমোদন সাপেক্ষে নির্বাচিতের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। গ্রেফতারি পারোয়ানার পর সাক্কুর শপথ ও দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে জটিলতার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার হলেও শপথ নিতে বাধা থাকবে না। সেক্ষেত্রে জামিন নিয়ে শপথের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে মামলার চার্জশিট আদালতে গৃহীত হলে শপথ নেওয়ার পরও বরখাস্ত করার সুযোগ থাকবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির শপথ নেওয়ার বিধান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে শপথ নিতে না পারলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এ সময়সীমা বাড়ানোর বিধান রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশ কপি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের গেজেটেরও অপেক্ষায় রয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে আগের মেয়াদে মেয়র ছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। গত ৩০ মার্চ নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে আবারো নির্বাচিত হন তিনি। গত মঙ্গলবার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাক্কুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। সেই সঙ্গে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মঙ্গলবার সকালে মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ নির্দেশ দেন।
বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পরই সাক্কুর পুরনো মামলা পুনরুজ্জীবিত হয়। তিনি দেখা না করলে হয়তো মামলাগুলো এত দ্রুত সামনে আসতো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান জানান, গেজেট প্রকাশের পর তিনি গ্রেফতার হলে বা জেলে গেলেও শপথ নিতে কোনো সমস্যা নেই। তিনি জামিন নিয়ে শপথ নিতে পারবেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আদালত যদি তাকে কোনো শাস্তি দেয়, সেক্ষেত্রে তার মেয়র পদ থাকবে না। ইসি সূত্র জানায়, কোনো জনপ্রতিনিধির নাম যদি আদালতের চার্জশিটে থাকে তাহলেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে। সূত্রে জানা গেছে, ১ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকার তথ্য গোপন এবং ৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালে ঢাকার রমনা থানায় মামলা করে দুদক। গত বছরের নভেম্বর মাসে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত ৯ মে গ্রেফতার ও ক্রোক সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন। সম্পাদনা : এনামুল হক