হাকালুকি হাওরে চলছে ভয়াবহ বিপর্যয়
স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার: এশিয়ার বৃহত্তর হাওর হাকালুকিতে চলছে এখন ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অকাল বন্যায় হাওর অঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধান নষ্ট হওয়ার পর হাওরের মিঠা পানিতে উৎপাদিত ২২ প্রজাতির মাছে প্রজনন মৌসুমে ব্যাপক হারে মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এ প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় তেমন কোন উদ্যোগ না নেয়ায় হাওর এলাকার প্রায় ৭ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মূখে। বর্ষা মৌসুমে শুরুতেই হাকালুকির বিল ও বাওরগুলোতে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনের এ মৌসুমে সাম্প্রতিক অকাল বন্যায় পানি দুষিত হয়ে ব্যাপক হারে মাছে মড়ক দেখা দিয়েছে।
হাকালুকি হাওরটি মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার ৫টি উপজেলা, কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ী, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জের বিস্তৃর্ণ এলাকায় অবস্থান করার পানি দূষণের এ ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন কুলাউড়া উপজেলা হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন বিলে গেলে এলাকার লোকজন জানান, চৈত্র মাসের অকাল বন্যায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের পাশাপাশি হাকালুকি হাওরের ছোটবড় ২৩৭টি বিলও তলিয়ে যায়। এদিকে অকাল বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ধানে পচন ধরে পানি দুষিত হয়ে প্রচুর মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখা যায়। কুলাউড়া মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান আহমদ জানান, বোরো ধানের পচনের ফলে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে হাওরের (কুলাউড়া অংশে) ৫ হাজার ৩ শ মেট্রিক টন চুন ও কিছু জিওলাইট দেয়া হয়েছে। তারপরও মাছের মড়ক নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। হাওরের চকিয়া বিলে ৩ বছরের জন্য ইজারা নেয়ায় ইজারাদার সেখানে ১৫ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করেন। কিš‘ মাছের মড়কে তারা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হবেন বলে জানান। এব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। হাওর তীরের কুলাউড়ার ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, হাকালুকি হাওর কেবল এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর নয়, দেশের সর্ববৃহৎ মিঠা পানির মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র।সম্পাদনা : মুরাদ হাসান