কমলগঞ্জে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪শ পরিবার
স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার: প্রবল বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরাতন ভাঙন ছাড়াও কোনাগাঁও এলাকা দিয়ে নতুন করে আরও একটি ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানিতে নিমজ্জিত থাকায় উপজেলার দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল রোববার পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। উজানে ভারী বর্ষণের ফলে কমলগঞ্জে ৩য় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। নতুন করে প্রায় ৫শ হেক্টর বোরো ফসল, সবজি ও মসলা ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। চারটি ইউনিয়নের ১৪’শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নি¤œাঞ্চল দিয়ে বন্যার পানি চলে যাওয়ায় তিনটি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিস্তীর্ণ মাঠ নিমজ্জিত হওয়ায় গো-খাদ্য সংকটে ভোগছেন এলাকার কৃষকরা। জানা যায়, শুক্রবার ২য় দফা বন্যার পানি শেষ হতে না হতেই শনিবার ভারী বর্ষণের ফলে ধলাই নদীর পুরনো দু’টি স্থান কমলগঞ্জ পৌরসভার গোপালনগর ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বাদে করিমপুর গ্রামের ভাঙন ছাড়াও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কোনাগাঁও এলাকা দিয়ে নতুন করে আরও একটি ভাঙ্গন দেখা দেয়। তিনটি ভাঙন দিয়ে প্রবেশ করা ঢলের পানি কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কের গোপাল নগর ও বাসুদেবপুর এলাকার সড়ক উপচে ঢল ও নদীর পানি গ্রামাঞ্চলসহ ও নি¤œাঞ্চলে প্রবেশ করে।
ফলে নতুন করে তলিয়ে যাচ্ছে নি¤œাঞ্চলের শমশেরনগর, মুন্সীবাজার, পতনঊষার ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম। গ্রাম্য রাস্তাঘাট ও বিস্তীর্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াত ও গো-খাদ্য সংকট সহ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। তিন সপ্তাগের মাঝে তিনবারে নদী ভাঙ্গরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বারো ক্ষেত হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যাওয়া কৃষকরা ব্যাংক ঋনসহ ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষক অহিদুল ইসলাম, মানিক মিয়া, তাহিদ আলী বলেন, এপ্রিলের প্রথম দফা বন্যায় বোরো ক্ষেত সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়। বন্যার পানির কারণে সম্পূর্ণরূপে বোরো ক্ষেত, সবজি ও মসলা ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন করে গো-খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষক তোয়াবুর রহমান তবারক বলেন, বোরো, সবজি ও মসলা ক্ষেত বিনষ্ট হওয়ায় নি¤œাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ব্যাংক ঋণ ও ঋণের সুদ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন। ঋণের সুদ ও ঋণ পরিশোধ করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। গোপালনগর ও বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষকরা জানান, বোরো সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হওয়ার পর তৃতীয় দফার পানিতে এখন আউশের বীজতলা নিমজ্জিত হয়ে বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।সম্পাদনা: মুরাদ হাসান