আন্ত:মহাদেশীয় দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল যুক্তরাষ্ট্র
রাশিদ রিয়াজ : ‘মিনিটম্যান’ নামে আন্ত:মহাদেশীয় দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ায় ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর রাশিয়ার সঙ্গে শীতল সম্পর্কের পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে টান টান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা তার প্রতিপক্ষ পরাশক্তি দেশগুলোকে আরো অধিক মানের উন্নত অস্ত্র ও পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের আকাঙ্খাকে উস্কে দেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ বিমান ঘাঁটি থেকে ‘মিনিটম্যান’ থ্রি আইসিবিএম পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বুধবার রাত ১২টা ৩মিনিটে। মার্কিন সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের প্রস্তুতি, নির্ভুলতা ও কার্যকারিতা প্রমাণ করতেই এ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করা হয়েছে। ডেইলি স্টার ইউকে
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর তোলা বিস্ময়কার ছবিতে দেখা যায়, ‘মিনিটম্যান’ ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ার স্থান থেকে ৪ হাজার ২’শ মাইল দূরে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে কাজালিন এটলে অবতরণ করে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনাময় সম্পর্কের ইতি না ঘটায় এবং তারই প্রেক্ষিতে এমন এক সময়ে এধরনের পারমাণবিক আন্ত:মহাদেশীয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষামূলকভাবে ছুড়ল দেশটি। এর আগে উত্তর কোরিয়া অভিমুখে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজ ইউএসএস কার্ল ভিনসন রওনা দেয়। একই সময়ে উত্তর কোরিয়া ব্যাপক কামান মহড়া চালিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৩০তম স্পেস উইং কমান্ডার কর্নেল জন মস দূরপাল্লার আন্ত:মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা দেখেছেন। তিনি বলেন, আজকের রাতে এধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা মার্কিন জাতির পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি অন্যতম নিদর্শন। পারমাণবিক অস্ত্র চালনার ব্যাপারে যে প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে সেখানে এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা প্রস্তুতি যাচাই করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ৩০তম স্পেস উইং ও বিমান বাহিনীর গ্লোবাল স্ট্রাইক কমান্ডের ৫৭৬তম ফ্লাইট টেস্ট স্কোয়াড্রনের নারী ও পুরুষরা এধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে একসঙ্গে একটি অসাধারণ সফল কাজ করেছেন। এ ক্ষেপণাস্ত্রের ন্যূনতম পাল্লা হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার দূরত্ব হচ্ছে ৮ হাজার কিলোমিটার এবং এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একে অপরকে আঘাত করতে পারে।
টাস্ক ফোর্স কমান্ডার কর্নেল টনি রোহাডেস বলেন, আমি এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সফল হওয়ায় গর্বিত। কারণ এধরনের লক্ষ্য সফল হওয়ার পেছনে প্রচুর পরিমাণ প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা ও মনোযোগের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে আমাদের বিমান বাহিনীর লোকবল সত্যিকারের পেশাগত দক্ষতা দেখিয়েছে। তবে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে টানাপড়ানের কোনো সম্পর্ক নাকচ করে দেন। মার্কিন বিমান বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়মমাফিক পরিকল্পনার অংশ।
এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে একাধিক ও দীর্ঘ পরিসীমার লক্ষ্যমাত্রায় পারমাণবিক অস্ত্রধারণকারী বিভিন্ন রসদ সরবরাহ চাঙ্গা রাখা। আন্ত:মহাদেশীয় দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম মোতায়েন করে রাশিয়া ১৯৫৮ সালে, পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তার কুড়ি বছর পর চীন এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ