চালের সঙ্গে বেড়েছে সবজির দাম
মাসুদ মিয়া: রাজধানীতে চালের সঙ্গে আরেক দফা বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। ফলে বেড়ে গেছে নিত্যদিনের বাজার খরচ, কষ্টে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৪২-৪৩ টাকা। কিছুদিন আগেও যা কেজিতে দুই টাকা কম ছিল। মাঝারি মানের চালের দামও উঠেছে ৪৬-৪৮ টাকায়। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে। এ দুই ধরনের চালের দাম কেজিতে তিন টাকা বেড়েছে। এদিকে
বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোতে শাক-সবজির মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনিতেই বাজারে ৪০ টাকার নিচে কোন সবজি বিক্রি করছিলেন না ব্যবসায়ীরা। এর উপর বৃষ্টির অজুহাত। ফলে প্রতি কেজি সবজির দাম ৩ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। সঙ্গে শাকের বাজার চড়া হয়েছে। তবে মাছ ও মাংসের দাম স্থিতিশীল আছে। নগরীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দু’দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে শাক-সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, গত সপ্তাহের বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে সবজি ক্ষেত থেকে শাক-সবজি তুলতে পারেনি চাষিরা। ফলে বাজারে কাচামালের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম। সবকিছু মিলিয়ে পাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্যই খুচরা শাক সবজির দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে বেশির ভাগ সবজিতেই দাম বেশি রাখা হচ্ছে। কয়েকটি আইটেম ছাড়া অন্যসব সবজিতে দাম বেড়েছে ৩ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কয়েক মাস ধরে বেশি দামে বিক্রি হওয়া বেগুন, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, করলা, বরবটি, ঢেঁড়স ও টমেটোসহ প্রায় সব সবজির দাম বেড়েছে। রাজধানীর মিরপুরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ঝিঙার দাম ছিল ৪০ টাকা, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা করে। মানভেদে করলার দাম বেড়েছে ৫ টাকা। গত সপ্তাহে যে করলা ৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে, তা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে, আর ৩৫ টাকার করলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা করে। পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। বেগুনের দামও বেড়েছে। এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। সাদা বেগুন ৫০ টাকা, কালো বেগুন ৪০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, ৩০ টাকার টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। ধুন্দলের দামও বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। মান ভেদে শসার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। ৫০ টাকার বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। কাঁচা কলার হালি ছিল ২৫ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে। কেজি প্রতি আলু ২০ টাকা, পেঁপে ১৫ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছিল গত সপ্তাহে। এখন ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া লেবু হালি প্রতি ২০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সবজিতেও অন্তত ৫ টাকা করে দাম বেড়েছে। পিরেরবাগ বাজারের ব্যবসায়ী হায়দার হোসেন বলেন, পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। সব সবজিই আড়ত থেকে বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে, যে কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা আমির বলেন, সব সবজির দাম বেড়ে গেছে। সামনে দাম আরো বাড়তে পারে। কারণ অনেক সবজিই এখন খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। অনেক সবজি পাওয়াই যাই না। আর যেগুলো পাওয়া যায় তার মান খুবই খারাপ। এর মাঝে আবার বৃষ্টি। অন্য সবজির সরবরাহও কম, তাই দামও বাড়তি। ক্রেতা ফিরোজ বলেন, সাধারণত এক সপ্তাহের বাজার এক সঙ্গে করি। গত সপ্তাহের চেয়ে গতকাল সব সবজির দাম বেড়েছে। এর পেছেন বৃষ্টিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু করার নাই। বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে। তবে মাছ মাংসের দাম বাড়েনি। মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, মাছের দামও স্বাভাবিক।