মিসরের নীল নদে শিশু মশি
খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেস্ক
যোষেফের সময়ে মিশর দেশের লোকেরা ইস্রায়েল জাতির সাথে ভাল ব্যবহার করত। যোষেফের মৃত্যুর পর মিশরে এমন একজন রাজা হলেন যিনি যোষেফকে এবং ইস্রায়েল জাতিকে চিনতেন না। এই রাজা বলেছিলেন, ‘আমরা ইস্রায়েলদের ওপর কড়া শাসন চালাব এবং মিশরের উন্নতির জন্য তাদের দিয়ে কঠিন পরিশ্রম করাব’। তিনি ভয় পেয়েছিলেন যে ইস্রায়েলরা সংখ্যা অনেক বেড়ে যাচ্ছিল এবং শক্তিশালী হচ্ছিলো। তিনি আদেশ দিয়েছিলেন যেন তাদের সকল ছেলে শিশুদের মেরে ফেলে।
এই কঠিন সময়ে ইস্রায়েল পরিবারে একটি সুন্দর ফুটফুটে ছেলের জন্ম হয়। কিছু দিন তারে মা তাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু আধো আধো কথা, হাসি কান্নার শব্দ, কয় দিন আর এভাবে রাখা যায়? তাই তিনি কি করবেন তা ভাবতে লাগলেন। কিভাবে তিনি তার সন্তানকে মিশরীয়দের হাত থেকে বাঁচাতে পারেন? নিশ্চয়ই ঈশ্বর তাকে রক্ষা করবেন। নদীর পাশে যে নলখাগড়া হয় তা দিয়ে তিনি ঝুড়ির মত ছোট একটি নৌকা তৈরি করলেন। তাতে আলকাতরা লেপে দিলেন। তারপর তার সন্তানকে সেই ঝুড়ির মধ্যে রেখে নীলনদের ঝোপের ধারে জলে ভাসিয়ে দিলেন। তিনি তার বারো বছরের মেয়ে মরিয়মকে বলে দিলেন যেন সেই ঝুড়ি কোন দিকে যায় তা চোখে চোখে রাখে। শীঘ্রই ফরৌণের মেয়ে তার বান্ধবীদের নিয়ে নীলনদে স্নান করতে এলেন, আরণ সেই ঝুড়িনৌকাটি দেখতে পেলেন। রাজকুমারী তখন তার চাকরানীদের তা তুলে আনতে পাঠালেন। ঝুড়িনৌকাটি খুলে তারা দেখলেন, একটি ফুটফুটে শিশু কাঁদছে। রাজকুমারী দেখে বুঝতে পেরে বলেন, ‘এতো ইস্রায়েল শিশু’। শিশুটিকে দেখে তার মায়া হল। শিশুটির বোন দূর থেকে সব দেখে কাচ্ছে গিয়ে বলল, ‘শিশুটিকে পালনের জন্য কি আপনার কোন ইব্রীয় মহিলা দরকার’? রাজকুমারী হ্যাঁ বললে মরিয়ম দৌড়ে গিয়ে তার মাকে জানাল। মরিয়মের মা যখন আসলেন তখন রাজকুমারী বলেন, ‘এই শিশুকে নিয়ে যাও, আমার জন্য তাকে মানুষ কর। আমি তোমাকে তার জন্য বেতন দিব। সুতরাং হাসিমুখে মা তার শিশুকে নিয়ে বাড়ি গেল। মা তাকে ঈশ্বরের সকল পথ সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন। শিশুটি যখন বড় হল, চলতে ফিরতে পারত তখন রাজকুমারী এসে তাকে রাজপ্রসাদে নিয়ে গেলেন। তার নাম দিলেন, ‘মশি’। ‘মশি’ নামের অর্থ হচ্ছে জল থেকে টেনে তোলা।