আজ মাংস ব্যবসায়ীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দাবি না মানলে রমজানে কর্মবিরতি
মাসুদ মিয়া : গরুর মাংসের ব্যবসা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ইজারাদারদের দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। এর জেরে গরুর মাংসের দাম চার মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলেন, বাড়তি দামের ফলে গরুর মাংস বিক্রি কমে গেছে। তাই ১ রমজান থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তারা। আজ রোববার মাংস ব্যবসায়ীদের সমিতি নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এর আগে কয়েকটি দাবিতে গত ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় দিনের কর্মবিরতি পালন করে তারা। এবিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম এই প্রতিবেদককে বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবি মানা হয়নি। যদি আমাদের দাবি মানা হয়, তাহলে আমরা এখনো ৩০০ টাকা দরে গরুর মাংস খাওয়াতে পারবো। তিনি আরও বলেন, সরকার ও করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি মাংস ব্যবসায়ী সমিতির দাবি ও অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেননি। রবিউল আলম বলেন, ঢাকা শহরে পাঁচ হাজার মাংসের দোকান ছিল। মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। এ জন্য এরই মধ্যে তিন হাজার মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করবে। গরু, মহিষ, ছাগল, বকরি, ভেড়ার মাংসের দাম নির্ধারণ করে আসছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে কোনো আলোচনা হয়নি, মাংসের দাম নির্ধারণ করেনি ডিএনসিসি। কেন করেনি, এটি তারাই বলতে পারবে। রবিউল আলম বলেন, তাদের দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি হচ্ছে, ডিএসসিসিতে স্থায়ী পশুর হাট তৈরি, মানসম্মত একাধিক কসাইখানা তৈরি, ১৫ দিনের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে তারা ১ রমজান থেকে কর্মবিরতি দেবেন। পরে অন্য কর্মসূচি দেবেন। এদিকে ধর্মঘট চান না মাংস বিক্রেতারা
মাংস বিক্রেতা সমিতির কর্মসূচি আর যা-ই হোক, মাংস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রায় দেড় বছর ধরে নির্ধারিত খাজনার চেয়ে বেশি অর্থ আদায় করছেন গাবতলী পশুর হাটের ইজারাদার। ফলে প্রতিটি গরুর জন্য বাড়তি পাঁচ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের। বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সংযোগ বন্ধ হওয়ায় ট্যানারিগুলোও গরুর চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ আলোচনা ছাড়া মাংস ব্যবসায়ীদের আলাদা একটি তালিকা করেছে। গাবতলী পশুর হাটে গরু-ছাগলের খাজনা দ্বিগুণ করেছে। সব মিলিয়ে মাংস বিক্রিতে লোকসানের পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে। তাই বাড়তি দামেই কেজিপ্রতি পাঁচশ’ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার গরু-মহিষ ও দেড় হাজার ছাগল-ভেড়ার চাহিদা রয়েছে। এসব গরু-মহিষের সিংহ ভাগ সংগ্রহ করা হয় দেশের দক্ষিণ-উত্তরাঞ্চলের জেলা ও ভারত থেকে। সংগ্রহের পর পশুর চালানের আবার বড় অংশ ঢাকার গাবতলী থেকে মাংস ব্যবসায়ীরা কিনে থাকেন। তাদের মাধ্যমেই রাজধানীর গরুর-মহিষের মাংসের চাহিদা মেটানো হয়। তাই গাবতলী পশুর হাটেই চাহিদার অধিকাংশ গরু-মহিষ বিক্রি হয়। সম্পাদনা : শিমুল মাহমুদ