মাহমুদুল হাসান রতন, ময়মনসিংহ: যে শহরে আমরা থাকতে পারবো না, সেই শহর চাই না। আমাদেরকে উচ্ছেদ করে নতুন শহর গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দিবো না। আমরা জেলে যাবো, মরব তবু বসতভিটা ছাড়ব না। পুরুষদের হয়রানি করা হলে নারীরাই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাম্প্রতিক ময়মনসিংহের চরাঞ্চলের নারীরা। ময়মনসিংহ বিভাগের প্রশাসনিক ও নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের বসত ভিটা রক্ষার দাবিতে র্দীঘদিন ধরে চলে আসা আন্দোলনে পুরুষদের বিভিন্ন চাপের মুখে নারীদের অংশ গ্রহণে সভা সমাবেশে বক্তরা এসব কথা বলেন। নারী সমাবেশে বক্তরা বলেন, চরের মানুষ হিসাবে আমরা গর্বিত। আমরা দালান কোঠা চাই না। নিজেদের বসত ভিটায় থাকতে চাই। যে শহরে আমাদের সন্তানেরা বসবাস করতে পারবে না, সেই শহর আমরা চাই না।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের প্রস্তাবিত নকশার পরিবর্তে বসতভিটা রক্ষা কমিটির ‘বিকল্প’ প্রস্তাব অনুযায়ী নতুন শহর গড়ার দাবিতে বসতভিটা রক্ষা কমিটির সাত মাস ধরে চলমান আন্দোলনের কর্মসূচিতে নারীরা অংশ নিচ্ছে । তারা বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বপাড়ের তিনটি ইউনিয়নের চার হাজার ৩৩৬ একর ভূমি নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে সরকার যা বাস্তবায়িত হলে ৬০ হাজার মানুষ, ২৮ হাজার বাড়িঘর, ৪৭৫টি পারিবারিক কবর¯’ান, ৩০টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি হাইস্কুল, ৬টি ঈদগাহ মাঠ, পাঁচটি বাজার, ৪৭টি মসজিদ, ২৫টি মাদরাসা, চারটি মন্দির, দু’টি মাজারসহ বৃক্ষরাজি ধ্বংস হবে।
প্রসঙ্গত ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রথমে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে এক হাজার দুইশত কুড়ি একর জমিতে নতুন শহর গড়ার নকশা প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ওই নকশা বাতিল করে নতুন নকশা অনুযায়ী চার হাজার ৩৬৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকেই চরাঞ্চলের মানুষ উ”েছদের আশঙ্কায় বসতভিটা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করে আসছে।