এবিটির আইটি বিশেষজ্ঞ গ্রেফতার
সুজন কৈরী : নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক বিভাগের আইটি শাখার প্রধান আশিকুর রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিককে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ভাটারার নর্দ্দা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আশফাক চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়ার ঘনিষ্ট সহযোগী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিটির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, এবিটির তিনটি বিভাগ-দাওয়া, আশকারী (সামরিক) ও মিডিয়া শাখা। মেজর জিয়া সামরিকভাবে প্রশিক্ষিত হলেও গ্রেফতার অয়ন আইটি বিশেষজ্ঞ। সে এই জঙ্গি সংগঠনের প্রকাশনা ও প্রচারণার দায়িত্বে ছিল। এবিটি যেসব লেখক-ব্লগারকে টার্গেট করত অয়ন তাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে তাদের সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করত। এসব তথ্য সে সামরিক শাখায় দিত। তার কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল সেট, আল আক্সা মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত ওসামা বিন লাদেন রচিত জিহাদী প্রবন্ধ, শেখ আনোয়ার আল আওলাকির জিহাদী বক্তব্য সংবলিত একটি লেখা ও ব্লগার হত্যাকা- সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ রুটিন পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, আনোয়ার আওলাকী আরব উপদ্বীপে আল কায়দার সক্রিয় নেতা ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে আশফাক জানায় ‘মুসলিমদের রক্তের পবিত্রতা’, ‘স্পেন বিজয়ে তারিক বিন জিয়াদ এর বক্তব্য’, ‘আমেরিকার জুলুম’সহ ধর্মীয় উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধকরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখনী বাংলায় অনুবাদ করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে। সে ব্লগারদের আইডি হ্যাকিংসহ তাদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে টার্গেট চিহ্নিতকরণের কাজে জড়িত ছিল।, মেজর জিয়ার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’ ওয়েব পেইজে ধর্মীয় উগ্রবাদ বক্তব্য সংবলিত বিভিন্ন আর্টিকেল সে নিয়মিতভাবে আপলোড করত।
আশফাক ২০১৪ সালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ছাত্র ছিল। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই এবিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে এবিটির সামরিক বিভাগে যোগ দেয়। সে জিয়ার অধীনে উত্তরায় ও পল্লবীর কালাপানি এলাকায় নাস্তিক ব্লগার হত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। পরবর্তী সময়ে এবিটির সামরিক বিভাগের আইটি শাখার প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়। কয়েক মাস আগে রাজধানীর বাইরে জিয়ার সঙ্গে তার দেখা হয়। সর্বশেষ দুইমাস আগেও তাদের যোগাযোগ হয়। তবে জিয়ার সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানে না বলে আটক হওয়ার পর পুলিশের কাছে দাবি করেছে আশফাক। এবিটির বর্তমান সক্ষমতা সম্পর্কে মনিরুল জানান, বর্তমানে এবিটি ‘ব্যাকফুটে’ থাকলেও সদস্য সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ও সংগঠন গোছানোর তথ্য রয়েছে। আশফাকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্পাদনা : ইসমাঈল হুসাইন ইমু