মে দিবসে বিশ্বজুড়ে সহিংসতা
লিহান লিমা : রাজপথে নেমে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উদযাপন করেছেন বিশ্বের বামপন্থি রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ। বেশিরভাগ র্যালি ও অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সংঘটিত হলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কিছু ইভেন্টে সহিংসতা গণমাধ্যমের নজর কাড়ে। খবর আরটি নিউজের।
উত্তর ইতালির তুরিনে ২০ জন মুখোশধারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তিনজনকে আটক করা হয় এবং একজন আহত হয়। প্যারিসের বাস্তিল স্কয়ারে কালো মুখোশ ধারণ করা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দাঙ্গায় একজন পুলিশ অফিসার মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
ইস্তাম্বুলে ২০০ বামপন্থি আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়েছে। দেশটির তাকসিম স্কয়ারে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এতে একজন নিহত হয় এবং ১৭টি গ্রেনেড ও কিছু সংখ্যাক অস্ত্র আটক করা হয়েছে। ১৯৭৭ সালের গণহত্যার আগে এই স্কয়ারটি মে দিবস পালনের জন্য একটি ঐতিহাসিক স্থান ছিল।
ইউক্রেনে বামপন্থি এবং জাতীয়তাবাদী দল ‘সিচ’ এর মধ্যে সংঘর্ষ হয় কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
নিউইয়র্ক সিটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় এবং ম্যানহাটনের জেপি মরগান এবং ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়ায় অন্ততপক্ষে ৪০ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস, সিয়াটল এবং ওয়াশিংটনে অভিবাসনের পক্ষে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
লন্ডনে শতশত বামপন্থি কর্মীরা সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্তালিনের ছবি নিয়ে র্যালি করেন। এক র্যালিতে লেবার পার্টির চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনাল্ড ব্রিটেনের বর্তমান পরিস্থিতির সমালোচনা করে সামনের নির্বাচনে লেবার পার্টিকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
কিউবার হাভানা স্কয়ারে মানুষ ফিদেল কাস্ত্রোর ছবি নিয়ে র্যালি করে। এই সময় একজন আমেরিকান পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পোর্টল্যান্ডের সিটি হলে প্রতিবাদকারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগে এটিকে অনিরাপদ স্থান হিসেবে ঘোষণা করে এবং সেখান থেকে সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়।
ফিলিপাইনের ম্যানিলার লিওয়াসাং বোনেফেসিও স্কয়ারে ৩৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে মজুরি বৃদ্ধি, নারী অধিকার ও সমকামী অধিকারের জন্য আন্দোলন করে এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নিন্দা জানায়। এদের মধ্যে কেউ কেউ দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তের মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হচ্ছে এমন ব্যানার নিয়ে র্যালি করলে তাদের আটক করা হয়।
তবে বিশ্বের কিছু কিছু স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে মে দিবস পালন করেছে। রাশিয়ায় ২৬ লাখ লোক একত্রিত হয়ে মে দিবস পালন করে। এতে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। বার্লিনের ঐতিহ্যবাহী ক্রেইজবার্গের আশেপাশে বামপন্থিদের ওপর নজর রাখতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এর আগে ২০০৯ সালে এক সহিংসতায় ২৭৩ জন পুলিশ আহত হয়েছিল, এই ঘটনায় ১০০ জনকে আটক করা হয়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি