প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে আইন মন্ত্রণালয়
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : সংসদে সংরক্ষিত আসনের বিধান তুলে দিয়ে সরাসরি নারী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ বাড়ানোর মতো এখনও পরিস্থিতি হয়নি বলে মনে করছে আইন মন্ত্রণালয়। এই কারণে আইন মন্ত্রণালয় সংরক্ষিত আসন রাখার ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নিতে চায়। আইনমন্ত্রী মনে করেন, সংরক্ষিত আসন আরো থাকতে হবে। তবে কত দিন, এটা এখনও হিসাব করতে পারছেন না। তার ইচ্ছে, যতদিন না নারীরা বেশি সংখ্যায় সরাসরি নির্বাচন করে বিজয়ী হয়ে আসতে না পারছে ততদিন সংরক্ষিত আসন রাখতে হবে। আর নির্বাচন পদ্ধতি কি হবে এ নিয়ে আলোচনারও প্রয়োজন আছে। তবে এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র।
বিএনপির সূত্র জানায়, বিএনপি সরকার ২০০৪ সালে সংসদে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বাড়িয়ে মেয়াদ দশম সংসদ পর্যন্ত করেছিল। বিএনপির পরিকল্পনা ছিল পরিস্থিতি হলে নবম ও দশ সংসদের পর (দশ বছর পর) সরাসরি নারী প্রার্থীদের নির্বাচনের জন্য দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। সেই অবস্থা না হলে সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন করা হবে। তবে এখনও তা সম্ভব হবে না বলে মনে করছে সরকার। এই কারণে সরকার সংসদে সংরক্ষিত আসন রাখছে। এই আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা এবং নির্বাচন পদ্ধতি যা আছে তা বহাল রাখার হবে কিনা এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তর জন্য অপেক্ষা করছে আইন মন্ত্রণালয়। কারণ আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা হলে তা বর্তমান বিধান রেখে মেয়াদ বাড়াতে হলেও সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে। কারণ আগামী সংসদের শুরুতে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সেই হিসাবে রাখা হলে মেয়াদ বাড়াতে হবে।
এই ব্যাপারে আইন মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দেশের এখন যে অবস্থা, এই অবস্থায় সরাসরি নারীরা পুরুষ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ৫০টি আসনে জয়ী হয়ে আসবেন এমনটি এখনও মনে হচ্ছে না। পুরুষ প্রার্থীদের সঙ্গে নারীদের জয়ী হয়ে আসার জন্য বিভিন্ন দিকগুলোও বিবেচনা করতে হবে। এই কারণে আমার মনে হয় সংসদে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য সংরক্ষিত আসন বহাল রাখতে হবে। এটা কতদিন সংরক্ষিত হিসাবে রাখতে হবে সেটা এখনই বলতে পারবো না কারণ এই ব্যাপারে আলোচনার প্রয়োজন আছে।
বিএনপি দুই মেয়াদের জন্য করেছিল সেই হিসাবে, আপনারাও কি দুই মেয়াদের জন্য রেখে দেখতে চান যে নারীরা আগামী দুই মেয়াদের পর সরাসরি পুরুষদের পাশাপাশি জয়ী হওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেন এই ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, এখন মেয়াদের কথাটি বলতে পারবো না। কারণ এটা আলোচনা যখন আমরা করবো তখনই বুঝতে প্রাবো। তবে এখানে আমি বলতে চাই, সংসদের যে ৩০০ আসন আছে ওই সব আসনেতো নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। সেই হিসাবে কেউ কেউ যদি মনে করেন যে তারা পুরুষ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে জয়ী হতে পারবেন সেটাতো তারা পারবেন। সেই ক্ষেত্রে তারা দলের মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করবেন। দলওতো যোগ্য নারী প্রার্থীদের মূল্যায়ন করছে। মনোনয়ন দিচ্ছে। এর পাশাপাশি নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আইন মন্ত্রী বলেন, সব মিলিয়ে আপাতত এটাই মনে হচ্ছে আগামী সংসদেও সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে। তবে নির্বাচন পদ্ধতি ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচনের নারীদের সংরক্ষিত আসনের মতো করে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে, নাকি এখনকার মতো রাখা হবে সেটা হচ্ছে বিষয়। এ নিয়ে আলোচনা হবে। তখন এগুলো সব বিষয় উঠে আসবে। এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। আশা করা যাচ্ছে এই মেয়াদেই এই সংক্রান্ত সংশোধনী আনা হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ