২০১৯ সালের মধ্যে বাণিজ্যিক পরিচালনা শুরুর টার্গেট মেট্রোরেলের পূর্ত কাজ ও স্টেশন নির্মাণে ৩ চুক্তি
হুমায়ুন কবির খোকন : মেট্রোরেলের ডিপো এলাকার পূর্ত কাজ এবং উত্তরা (উত্তর) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ও নয়টি স্টেশন নির্মাণে তিনটি চুক্তি সই করেছে সরকার। আগামী ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক পরিচালনা শুরুর টার্গেট নিয়ে এ প্রকল্পের কাজ চলছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে মেট্রোরেলের প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন এবং নির্মাণকারী দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তোয়াত চাই সুথি রাপা চুক্তিতে সই করেন।
প্রকল্পের প্যাকেজ ২, ৩ ও ৪ এর আওতায় এসব স্থাপনা নির্মাণে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।
প্যাকেজ-২ এর চুক্তি মূল্য প্রায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। এই প্যাকেজের আওতায় ডিপো এলাকার পূর্ত কাজ করা হবে। ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড এবং সিনোহাইড্রো করপোরশন লিমিটেড জেভির সঙ্গে এ চুক্তি হয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, এই প্যাকেজের আওতায় নির্মাণ হবে স্টাবলিং ইয়ার্ড (বিরিতিতে ট্রেন রাখার স্থান),ট্রেন মেরামত ও ওভারহোলের মালামালের গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপ, অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, ট্রেন ইন্সপেকশন, জেনারেটর ও ইলেকট্রিক্যাল ভবন, ট্রেন ওয়াশ স্থাপনা, ম্যানুয়াল ট্রেন ওয়াশিং, বহুতল কার পার্কিং ও গ্রিন স্পেস। এছাড়া প্যাকেজ ৩ ও ৪ এর আওতায় উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও নয়টি স্টেশন নির্মাণ হবে। এই দুই প্যাকেজের চুক্তিমূল্য প্রায় চার হাজার ২৩০ কোটি টাকা। এই দুই প্যাকেজের কাজের জন্য চুক্তি হয়েছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে।
চুক্তি সইয়ের পর সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প ৮টি প্যাকেজ বাস্তবায়িত হচ্ছে, প্যাকেজ ২, ৩, ৪ এর চুক্তি স্বাক্ষর হলো।
আগামী ২০১৯ সালে মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক পরিচালনা শুরু হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজান ঘটনার পর মেট্রোরেলের কাজ কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছিল, তাদের সাতজন কনসালটেন্ট নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হওয়ায় গতি স্তিমিত হয়ে যায়, প্রায় ছয় মাসের মতো পিছিয়ে গেছি, এখন আবার পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে।
মেট্রোরেলের প্রস্তাবিত নকশা এখন থেকে কাজ কোনো বিঘœ ঘটবে না বলেও জানান তিনি। মেট্রোরেল প্রকল্পের প্যাকেজ-১ এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে এবং ইতোমধ্যে এর ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে আশ্বাস দিয়েছেন, তা থেকে বোঝা যায়-শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যথাসময়ে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন করা হবে।
২০১৯ সালে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতি চার মিনিট পরপর এক হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল; ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী।
চুক্তি অনুষ্ঠানে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও ইতালিয়ান কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।